রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা অনেকেরই স্বজন বসবাস করছেন মিয়ানমারের বলিপাড়া, মংডু, তমব্রু, ঢেকিবুনিয়াসহ সীমান্তবর্তী এলাকায়। জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীদের যুদ্ধে অনেকটা গৃহবন্দী দিন কাটছে তাদের। খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ বন্ধ আছে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চাইলেও তা পারছেন না।
একজন রোহিঙ্গা বলেন, 'আমার আত্মীয়-স্বজন ভাই-বোন সবাই মিয়ানমারে থেকে গেছে। তারা ওখানে চলাফেরা করতে পারছে না। এটা নিয়ে আমি খুব চিন্তা ও কষ্টে আছি।'
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে। এতোদিন মিয়ানমারের সাথে আলোচনা চলছিল। কিন্তু এখন আরাকান রাজ্যের বিশাল অঞ্চল দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এখন রোহিঙ্গারা ফেরত যাবে কি-না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে একধরনের উদ্বেগ। ক্যাম্পে থাকা ১৩ লাখ রোহিঙ্গা এখন কী ভাবছে?
রোহিঙ্গারা বলছেন, আগে বারবার হামলার শিকার হয়েছেন তারা। বিদ্রোহী আরাকান আর্মি রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার শঙ্কা তাদের। এর আগে জান্তা সরকারের দেয়া প্রত্যাবাসনের আশ্বাসে এখন আর ভরসা রাখতে পারছে না ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা।
ত্রাণ, শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমর্কতারা মনে করছেন, চলমান সংঘাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থমকে যাবে। বিদ্রোহীদের সাথে নতুন করে আলোচনা শুরু করাও এখন সম্ভব নয়।
আরআরআরসি কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, 'এ মুহূর্তে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা অনেকটা থমকে গেছে। প্রত্যাবাসনের একটি প্রক্রিয়া হচ্ছে রাখাইন স্টেটের স্থিতিশীলতা। এখন যেহেতু সে অবস্থা নেই, স্বাভাবিকভাবে কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।'
চলতি সংঘাতে নতুন করে মিয়ানমার থেকে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৩শ'র বেশি সদস্যকে ফেরানোর আলোচনা চলছে। তবে কবে তাদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার; তা এখনও নিশ্চিত নয় কেউই।