মূলত মিয়ানমারে অভ্যন্তরীন অস্থিরতায় দেশটিতে জ্বালানি তেলের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এর সুযোগ নিচ্ছে দুই দেশের সঙ্ঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র। এমন প্রবনতার মধ্যেই গত ১৫ দিনে ১১ হাজার লিটারের বেশি জ্বালানি তেল জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, গত প্রায় দুই মাস ধরে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলা থেকে জ্বালানি তেল, বিশেষ করে অকটেন পাচার করছে সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটি। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হলে কক্সবাজার শহর থেকে মেরিনড্রাইভ সড়ক হয়ে পাচার শুরু করে চক্রটি। অধিকাংশ জ্বালানি পাচার হয় ট্রলারযোগে।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুরে জেলার পেট্রোল পাম্প মালিক ও জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। বৈঠকে জেলার সকল পেট্রোল পাম্প ও জ্বালানি তেল বিক্রির দোকানে ক্রেতাদের তথ্য সংরক্ষণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অনিবন্ধিত কোন নৌযানকেও জ্বালানি সরবরাহ করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রশাসন।
জেলা পেট্রোল পাম্প এসোসিয়েশনের সভাপতি আল জুবায়ের মানিক বলেন, 'আমরা যারা ডিলার আছি তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো অনিয়মের সাথে জড়িত কারও কাছে তেল বিক্রি না করার।'
বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আমদানি করা এসব জ্বালানি তেল মিয়ানমারে পাচার হওয়ায় দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বলেন, 'আমাদের দেশের চোরাকারবারীদের সাথে মায়ানমারের সিন্ডিকেট সদস্যরা বিভিন্ন উপায়ে তেল পাচার শুরু করেছে। সরকারের উচিত হবে সমন্বিত গোয়েন্দা নজরদারির শুরু করা।'
এদিকে জেলার জ্বালানি তেল বিক্রয়কারি প্রতিষ্ঠানগুলো কি পরিমান উত্তোলন করছে, কতটুকু বিক্রি করছে আর কি পরিমান জমা আছে সে সম্পর্কে প্রতি সপ্তাহে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, 'লাইসেন্সবিহীন যে দোকানগুলো পেট্রোল ও অকটেন বিক্রি করছে আমরা সেগুলো বন্ধ করে দিবো। যারা লাইসেন্সধারী আছেন তাদেরকে রেজিস্ট্রি মেইনটেইন করতে বাধ্য করবো। তারা প্রতি সপ্তাহে আমাদের কাছে জমা দিবে।'
আইনশৃংখলা বাহিনী বলছে, মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০০ টাকার বেশি মূল্যে। আর বাংলাদেশে এসব অকটেন বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৩০ টাকার। এর সুযোগ নিচ্ছে চোরাকারবারিরা।