যশোরের গদখালির ফুল চাষি সাজেদা খাতুন। চলতি মৌসুমে ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দুই বিঘা জমিতে জারবেরা ফুলের চাষ করেছেন। চার মৌসুমে এই বাগান থেকে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ফুল বিক্রির আশা তার।
তিনি বলেন, 'আমি এই দুই বিঘা জমি থেকে চার বছর ফুল নিতে পারবো। বাজারে যদি এইরকম দাম থাকে তাহলে আমরা লাভবান হইতে পারবো।'
জেলার অন্যান্য ফুলচাষীরাও এবার বিনিয়োগ করেছেন বিভিন্ন প্রকার ফুল চাষে। স্বাভাবিক বিক্রির পাশাপাশি ইংরেজি নববর্ষ সামনে রেখে বিক্রি বেড়েছে গদখালীর পাইকারি ফুলের বাজারে। গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনিগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিক্রি হচ্ছে নানা জাতের ফুল।
কৃষকরা বলেন, 'এইবছর ফুলের দাম খুব ভালো হইসে। বিগত দিনের ঝামেলাগুলো কাটিইতে পারসি।'
গদখালি ফুলচাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, 'আশাকরছি নববর্ষ উপলক্ষে ২ থেকে ৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে। আমরা চাই প্লাস্টিকের ফুল আমদানি এবং ব্যবহার বন্ধ হোক।'
ফুল সংগ্রহ করতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন যশোরে। ভোর থেকে শুরু হয় ফুলের জমজমাট বেচাকেনা। দাম নিয়েও সন্তুষ্ট তারা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, 'পহেলা জানুয়ারি উপলক্ষে আমরা ফুলের ভালো দাম পাচ্ছি। যদি মূল্য এমন থাকে তাহলে আমাদের ভালো হবে। প্রত্যেকটা জেলায় গদখালির ফুল পৌঁছে যাচ্ছে।'
কৃষি বিভাগ বলছে চলতি বছর যশোরে ফুল উৎপাদন ভালো হয়েছে। যে কোন দিবস ঘিরে বাড়তি ফুল বিক্রির ক্ষেত্রে পরিকল্পনার কথা জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার।
তিনি বলেন, 'এখানকার কৃষক অত্যন্ত প্রগতিশীল। আশা করি বিগত বছরের তুলনায় কৃষক ফুল আবাদে এগিয়ে আসবে এবং যশোরের অর্থনৈতিকে সমৃদ্ধ করবে।'
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে যশোরে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ১১ ধরনের ফুলের চাষ হয়। যা থেকে প্রতি বছর ৪শ' থেকে ৫শ' কোটি টাকার ফুল উৎপাদন হয়।