গুটি পায়ে হেটে যায় দ্বাদশীর চাঁদ। সাথে শীতের খানিক কুয়াশা যেন বাড়িয়ে দিয়েছে তার ঐশ্বর্য। এমন চাঁদনী রাতে, শহুরে যান্ত্রিক মানুষ ছুটে যেতে চায় চাঁদের কাছে।
ইট পাথরের এই শহরে যখন দ্বাদশীর চাঁদ হাসে। শহুরে মানুষের মনে সেই চাঁদকে ঘিরে স্পন্দন দোলা দেয়।
এই চাঁদ নানা জনের কাছে ধরা দেয় নানা রূপে। তার সঙ্গে তাই তাই মানুষের বন্ধুতা পুরনো। কৌতুহলী মানুষ তাই নিজেকেই যেন খুঁজে ফেরেন চাঁদের আলোয়!
পূর্ণিমা প্রেমিরা বলেন, 'ঢাকার যানজট আর ব্যস্ততার মধ্যে সাধারণত চাঁদটা খুব বেশি দেখা হয় না। দ ‘জন দু’জায়গায় থাকলেও চাঁদ কিন্তু একই। তাই যতই রাত বাড়ে চাঁদ যেন প্রেমিক-প্রেমিকাকে ততই কাছে ডাকে।
ভালোবেসে চাঁদকে কত মানুষ কত নামে ডাকে। কেউবা মিল খুঁজে পান প্রিয় মানুষটার মুখের সঙ্গে। চাঁদ তাই বারবার মানুষের মুখে ফেরে নানাবিধ উপমায়। তবুও এই ব্যস্ত শহরে প্রিয়তমার সাথে দেখা হলেও, দেখা হয়কি চাঁদের সাথে?
কবি সালমান হাবীব বলেন, 'মানুষ আসলে চাঁদের জ্যোৎস্নায় মোহগ্রস্ত হতে চায়। কিন্তু চাঁদেরও যে নিজস্ব কিছু দুঃখ আছে তা দেখে না। চাঁদের কালো দাগগুলোই তার দুঃখ। আকাশে যে নক্ষত্র দেখে আমরা আবেগতাড়িত হই, সেগুলো মূলত আকাশের বুকে জমা হওয়া একেকটা ক্ষত।'
রাতকে আকর্ষণীয় করছে ঝলমলে চন্দ্রালোক
নগরবাসী বলেন, সামাজিক সংকটে চাঁদ আমাদের অন্যভাবে ভাবায়। সুকান্ত বলেছেন, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। ক্ষুধার্থ মুহূর্তে চাঁদ মূল্যহীন। আবার যুদ্ধের সময় যখন মানুষ সংকটময় অবস্থায় থাকে তখন জোঁছনার দৃশ্য চোখে পড়ে না। চাঁদ ও চাঁদের আলো একেকভাবে মানুষের জীবনে একেক রকম। যার বিচ্ছেদ আছে সে চাঁদকে দেখে প্রিয়জনের চেহারা মনে করে।
বিশাল দালান পেরিয়ে সময় করে কেউ কেউ দেখে এই চাঁদকে। সারাদিনের শহুরে ব্যস্ত গল্পের শেষে এই পূর্ণ চাঁদ মনে করিয়ে দেয় সেই শৈশবের কথা। গ্রামের সেই নারকেল গাছটার কথা। যার ফাঁকে দিয়ে আসা জোছনা ছুঁয়ে গেছে এই পৃথিবীর মাটিকে।