একুশ শতকের শুরুর দিকে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু কেবল টিভি। তখন থেকেই শহর থেকে গ্রামে বিনোদনের বড় মাধ্যম হয়ে ওঠে দেশি-বিদেশি নানান চ্যানেল। আর একে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থান হয় প্রায় ৫ লাখ মানুষের।
তবে তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশে নানা চ্যালেঞ্জে পড়ছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার এই খাত। যার মধ্যে নতুন সংকট হিসেবে হাজির হয়েছে আইএসপি সার্ভারগুলো। গ্রাহক পর্যায়ে যে কেউ চাইলে ক্যাবল সংযোগ ছাড়াই টিভি চ্যানেল দেখতে পাচ্ছেন। সেই তালিকায় বিদেশি পে চ্যানেলগুলোও রয়েছে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষক গোপাল বসাক। কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে ইন্টারনেট সার্ভিসদাতা প্রতিষ্ঠানের দেয়া সার্ভারে দেশি-বিদেশি চ্যানেল দেখেন। যা আইনসিদ্ধ না হলেও হাতের নাগালে বিনামূল্যেই পে চ্যানেল দেখার সুযোগ রয়েছে ।
গোপাল বসাক বলেন, ‘গ্রাহক হিসেবে তো আমি দেখার চেষ্টা করবো। কিন্তু এখানে যারা এই সুবিধা দিচ্ছে তাদেরকে ভাবতে হবে এটি অনুমোদিত কিনা? তারা সুযোগ দিচ্ছে বলেই তো আমি দেখছি।’
অনিয়মের এখানেই শেষ নয়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিদেশি চ্যানেলে হরহামেশা বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। প্রায় ১ বছর ধরে এ নিয়ে বিটিআরসি'র কাছে অভিযোগ করে আসছে কোয়াব। তবে তাতেও কোন সাড়া মেলেনি।
কোয়াব-এর সভাপতি এ বি এম সাইফুল হোসেন বলেন, ‘অবৈধভাবে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে। গ্রাহকরাও দেখছেন, কিন্তু এতে করে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। আর আমাদের এ খাতের ভবিষ্যত ঝুঁকিতে পড়ছে।’
অভিযোগের বিষয়ে ইন্টারনেট সেবাদাতারা ভিন্ন কথা বলছেন। তাদের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ নিলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
প্রায় ৪০০ ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের নামে বিটিআরসিতে অভিযোগ দিয়েছে কোয়াব। অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বিটিআরসি'র কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘আমরা সাধ্যের মধ্যে সবকিছুই করার চেষ্টা করছি।’
এদিকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কিছু ইন্টারনেট সেবা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে বিটিআরসি। তবে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।