চট্টগ্রামে পিছিয়ে থাকা জনবহুল, জলাবদ্ধতা প্রবণ এলাকাতে এবার ডেঙ্গু রোগী বেশি পাওয়া গেছে। এসব এলাকা থেকে অন্তত ৬০ শতাংশ রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। নগরীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের দেড় হাজারের বেশি রোগীর ওপর চার মাস ধরে এই গবেষণা চলে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে গবেষণায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিডিডিআরবিসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা অংশ নেন।
গবেষণায় দেখা যায়, আক্রান্তদের একটি বড় অংশ স্বল্পশিক্ষিত। নগরীর পাশাপাশি এবার আশপাশের উপজেলাতেও আক্রান্তের হার আশঙ্কাজনক। চট্টগ্রামে চলতি বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গু আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান বলেন, মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু মোকাবিলায় নগরীর মানুষ অসচেতন ছিলেন। বিশেষ করে, মশারি ব্যবহারে উদাসীন ছিলেন।
গবেষণায় উঠে এসেছে, বন্দর নগরীতে এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের প্রতি পাঁচজনের একজন শিশু। আক্রান্তদের ৬৫ শতাংশ পুরুষ হলেও নারী ও শিশু মৃত্যুর আনুপাতিক হার বেশি। এছাড়া ৭৫ ভাগ রোগী ডেন-২ সেরোটাইপ ধরনের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন। আর ১১ শতাংশ রোগী বিরল ডেন-১ এ আক্রান্ত।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুর রব মাসুম বলেন, ডেন-১ আগে ছিলো না। হঠাৎ করে আমরা গবেষণায় পেয়েছি। সেটা নিয়েই আমরা কাজ করছি।
মহানগরীর আশপাশে ব্যাপক হারে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার কারণ ও জিনগত পরিবর্তন অনুসন্ধানে আরও গবেষণা জরুরি বলে মনে করেন গবেষকরা।
চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৯৬ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী ও ৩৫ জন শিশু। আর মোট আক্রান্ত ১৩ হাজার ২১৮ জন।