পুরো দেশ ছিল অপেক্ষায়, ওসমান হাদি ফিরবে। সেই হাদি ঠিকই ফিরলেন দেশে। কিন্তু প্রাণহীন হয়ে, লাল সবুজের পতাকায় মুড়ে।
বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় অবতরণ করে হাদিকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইট। বিমানবন্দরের সোডিয়াম আলোও যেন এদিন ম্লান হয়ে পড়েছিলো। ইনসাফ কায়েমের স্বপ্নে বিভোর তুর্কী যোদ্ধার নিথর দেহও যেন বেশ ভারবাহী হয়ে উঠেছিলো। তাই টারমার্কে এসে দাঁড়াতেও যেন বেশ সময় লাগছিলো উড়োজাহাজটির। বিমান থামার পর রাতের আঁধার ভেদ করে সিঁড়ি বয়ে নেমে আসে রক্তাক্ত দ্রোহ ও বিপ্লব মোড়ানো কফিন। যেন বাংলাদেশের মধ্যেই আরেকটি বাংলাদেশ মোড়ানো।
আরও পড়ুন:
বিপ্লবের প্রতীককে গ্রহণ করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সহযোদ্ধাসহ বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির শীর্ষ নেতারা। সঙ্গে ছিলেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। যেন ওসমান হাদির জন্য আর একবার এক মঞ্চে বাংলাদেশ। দীর্ঘদিনের সতীর্থরা অশ্রুসিক্ত হয়ে নির্বাক ভঙ্গিতে ছুঁয়ে দেখেন রক্তাক্ত বাংলাদেশের অকুতোভয় বীরকে। এরপর ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সসহ গাড়ি বহর যাত্রা করে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের হিমঘরের উদ্দেশে। বিমানবন্দরের রানওয়ে হয়ে সেনানিবাসের ভেতর দিয়ে গাড়ি বহর পৌঁছায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
শনিবার বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা। ইনকিলাব মঞ্চের দাবি অনুযায়ী এরপর তাকে সমাহিত করা হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে।
বিদ্রোহের জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে যে শরীফ ওসমান হাদিকে নতুন করে চিনেছে পৃথিবী সে কি জানতো, মৃত্যুর পর বিদ্রোহী কবির পাশেই ঠাঁই হবে তার?




