টঙ্গী অগ্নিকাণ্ড: ফায়ার ফাইটার জান্নাতুল নাঈমের জানাজা সম্পন্ন

জান্নাতুল নাঈমের জানাজা
জান্নাতুল নাঈমের জানাজা | ছবি: সংগৃহীত
1

টঙ্গীতে রাসায়নিকের গুদামের আগুন নির্বাপণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণকারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর (অফিসার) খন্দকার জান্নাতুল নাঈমের (৩৭) জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ (শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল এবং মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা-কর্মচরিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার আগে শহিদ জান্নাতুল নাঈমের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এসময় অগ্নিসেনাদের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।

পরে সময়ে প্রয়াত মো. খন্দকার জান্নাতুল নাঈমের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করা হয়। শহিদের শ্বশুর আবেগঘন কণ্ঠে বক্তব্যে সবার কাছে সন্তানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও দোয়ার আবেদন জানান। বক্তব্য শেষে জানাজা আদায় ও দোয়া পরিচালনা করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ধর্মীয় শিক্ষক মুহাদ্দিস কাজী শরিফ উল্লাহ।

অগ্নিকাণ্ডের লেলিহান শিখায় নিজের জীবন আত্মত্যাগী শহিদ খন্দকার জান্নাতুল নাঈমকে শেষবারের মতো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে দেখেন ও শ্রদ্ধা জানান সহকর্মীরা। পরে মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স যাত্রা শুরু করে তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নকলা উপজেলার গড়দুয়ারা গ্রামের পথে। সেখানেই নিজ মাটির বুকে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন অগ্নিসেনাদের এ বীর সন্তান।

আরও পড়ুন:

এর আগে গাজীপুরের টঙ্গীর কেমিক্যাল কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। খন্দকার জান্নাতুল নাঈমের শরীরের ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বার্ন ইন্সটিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান।

গত ২২ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর সাহারা মার্কেটের কেমিক্যাল কারখানায় আগুন নেভাতে গিয়ে তিনি দগ্ধ হন। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের চারজন আহত হয়েছিলেন। এরইমধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ ও বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা মারা যান। সবশেষ জীবন দিলেন ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈম।

নাঈম শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার খন্দকার বাড়ির মোজাম্মেল হক ও দেলোয়ারা বেগমের ছেলে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ও এক সন্তানের জনক। তিনি ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন। চাকরি জীবনে স্টেশন অফিসার হিসেবে মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর হিসেবে চট্টগ্রাম ও সবশেষ টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।

এসএস