অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় মাসুমাকে দাফন, দুর্ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি

0

পরিবার পরিজন আর সহকর্মীদের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় শেষ বিদায় নিলেন এখন টিভির রাজশাহী ব্যুরো রিপোর্টার মাসুমা আক্তার। ঢাকা থেকে তার লাশবাহী গাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুরের নারায়নপুর গ্রামে আসলে সৃষ্টি হয় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। পরে নারায়নপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে জানাযার নামাজ শেষে নারায়নপুর গোরস্তানে তার দাফন কার্যসম্পন্ন হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান মাসুমার সহকর্মীরা।

হাতে বুম আর ক্যামেরা, বলিষ্ঠ কণ্ঠে মুখে ঘটনার বর্ণনা। স্বভাব সুলভ হাসিতে যে সহকর্মীর হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে অভ্যস্ত সহকর্মীরা। আজ সে বন্ধু,সহকর্মী আর প্রিয় মানুষটার নিথর দেহ সাদা কাফনে বন্দী। তার এ অনুপস্থিতি কতটা মানছে প্রাণ।

ঢাকার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বিকেল ৪টায় ফ্রিজিং গাড়িতে মাসুমার নীরব উপস্থিতি বলে দিয়েছে অনেকের হৃদয়! পরে, নাটোরে নিজ গ্রামে পৌঁছালে গ্রামবাসী আর স্বজনদের আহাজারিতে তৈরি হয় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। কান্নায় ভারি হয়ে উঠে চারপাশ।

ছোটবেলা থেকেই মিশুক মাসুমা। তার আচার আচরণেও মুগ্ধ ছিল গ্রামের মানুষ। হঠাৎ তার চলে যাওয়ায় স্তব্ধ সবাই।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘ছোটকাল থেকেই অনেক ভালো সবার সাথেই মিশুক ছিল সে।’

আরেকজন বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে খুবই ভালো ছিল। সবার সাথে আচার- আচরণ ভালো ছিল।’

এ গ্রামেই ২০১০ সালে স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০১২ সালে মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর রাজশাহীর নর্থবেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ। আর তখন থেকেই সংবাদের পেছনে ছুটে চলা!

স্বল্প সময়ে সাংবাদিকতায় মাসুমার দক্ষতা, কাজের প্রতি একাগ্রতা আর ভালোবাসা জানান দিয়েছিল তার বেড়ে ওঠার ইঙ্গিত। তার জানাজায় হাজির রাজশাহীর সাংবাদিকদের কণ্ঠে তারই ছাপ। শাস্তি চাইলেন, তার দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের।

সহকর্মীদের একজন বলেন, ‘আমরা তো আমাদের সহকর্মীকে হারালাম। সেই জায়গায় থেকে এইটার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।’

আরেকজন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে চালক তাকে পুলিশ আইনের আওতায় আনতে পারেনি। যা খুবই দু:কজনক।’

গেল ১৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে ঢাকায় এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে চির বিদায় নেন রাজশাহীর টেলিভিশন সাংবাদিকতায় এই নারী সাংবাদিক।

ইএ