দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে ভারত-চীনকে বাঁধ নির্মাণের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

0

ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সিয়ান নদী ও চীনের তিব্বত সীমান্তে বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ (সোমবার, ২৭ জানুয়ারি) ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পরে দুপুর ২ টার দিকে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সিয়ান নদী ও চীনের তিব্বত সীমান্তে বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে দেশে পানি সংকট ও খরায় কোনো প্রভাব পড়বে কি-না?

এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘চীনের তিব্বতে সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্পের বিষয়ে তথ্য চেয়ে চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে চীন আমাদের বলেছেন, তাদের এই প্রকল্পে লোআর রিপারিয়ান (নিম্ন জলজ ভূমি এলাকা) দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তারপরও আমরা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে তারা যেন তথ্য-উপাত্ত চায়। কারণ তথ্য-উপাত্ত না পেয়ে এখনো বলা সম্ভব নয়। অন্যদিকে ভারতে যেখানে বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে অভ্যন্তরীণ বিরোধ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে পদ্মা অন্যদিকে তিস্তার পানি কমে গিয়েছে। এখন যদি ব্রহ্মপুত্রের পানি কমে যায় তাহলে নদীমাতৃক বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাবে এবং বড় ধরনের কম্প্রোমাইজে পড়ব। কাজেই উভয় দেশের কাছে আমরা চাইব, আমাদের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের নতুন কাজের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘নদী গবেষণাকে কয়েকটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যেটা তাদের ভিজিবিলিটি বাড়াতে সহায়তা করবে। যেমন শিল্প প্রবণ এলাকায় নদী কি পরিমাণ দূষিত হয়ে থাকে, ঢাকার বড় বড় নদীগুলো দূষণের বিষয়ে জিপিএস পয়েন্ট দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান জানাবে। তাহলে দাতা সংস্থা থেকে লোন নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন হবে না। এছাড়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর ইকোসিস্টেমের ওপর কি ধরনের প্রভাব পড়বে এবং ওই বিষয়ে এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে বলা হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু কিছু গবেষণা সরকারি পর্যায়ে হয়ে থাকে। সে গবেষণাগুলো দেখা যায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য সংস্থা দিয়ে করিয়ে থাকে। কিন্তু আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে যেখানে এই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা রয়েছে সেখানে কাজ করতে বলা হবে এবং সেটা সরকারি যে সংস্থা যাকেই চুক্তি দেয়া হোক না কেন সে বিষয় চুক্তিপত্রে লেখা থাকবে।’

অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের সহিংসতার ক্ষেত্রে সকলকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সহিংসতার পেছনে কোনো উস্কানি রয়েছে কি-না সে বিষয়ে সরকারি সংস্থা কাজ করছে বলে তিনি জানান।

সাংবাদিকদের সাথে প্রশ্নোত্তর শেষে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এস এম আবু হুরায়রা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক তাহমিদুল ইসলাম, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এএইচ