দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক। রপ্তানিতে প্রায় ৮৬ শতাংশ অবদান রাখা এ শিল্প খাতটি বিভিন্ন ইস্যুতে নানা সময়ে অস্থির হয়ে ওঠে। ৫ আগস্ট স্বৈরশাসনের পদত্যাগ ও দেশের পট পরিবর্তনের পর গেল এক সেপ্টেম্বর বকেয়া বিল বেতন ভাতা বৃদ্ধি ও নানা সুযোগ সুবিধার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে আশুলিয়া ও গাজীপুরের পোশাক শ্রমিকরা।
এ সময় পোশাক কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ ঘোষণা করা হয় ওই এলাকার অনেক কারখানা। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় এলাকার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও পুরোপুরি শান্ত হয়নি এ শিল্প অঞ্চল।
গেল বুধবার উপদেষ্টা পরিষদেও শ্রমিক আন্দোলন নিয়ে আলোচনা হয়। ব্যাংকের সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে বেক্সিমকো কারখানাসহ যে সকল কারখানা বেতন দিতে পারছিল না বৃহস্পতিবারের মধ্যে সে সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। এরপরও শনিবার পর্যন্ত থামেনি শ্রমিক অসন্তোষ।
পোশাক খাতের অস্থিরতা চলমান সংকট ও উত্তরণের পথ নিরূপণে শনিবার এক মতবিময় সভার আয়োজন করে বিজিএমইএ। সভার শুরুতে বিজিএমইএ সভাপতি কথা বলার পর মুক্ত আলোচনার এক পর্যায়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার কথা বলা শুরু করলে শুরু হয় হট্টগোল।
এরপর কথা বলা শুরু করেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতিরা। পোশাক শ্রমিক অসন্তোষের পিছনে ব্যাংক থেকে সঠিক সময়ে অর্থ না পাওয়াকে দায়ী করলেন অনেকেই। এছাড়া পোশাক শ্রমিকদের জন্য রেশন সুবিধার দাবি জানান পোশাক মালিকরা।
পোশাক শিল্পে অস্থিরতা জন্য তিনটি কারণ উল্লেখ করলেন শিল্প এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। আর বেক্সিমো গ্রুপের শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে বিশেষভাবে নজর দেয়ার তাগিদ শিল্প পুলিশের ডিআইজির।
এরপর শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার কথা বলার পর অনুষ্ঠান যখন শেষের দিকে তখন আবারো শুরু হয় হট্টগোল। মালিকদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার মাধ্যমে কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে নিশ্চয়তা চাওয়া হলেও উপদেষ্টাদের বক্তব্যে তেমন কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে চেয়ার থেকে উঠে এসে আবারো কথা বলেন শ্রম উপদেষ্টা।
বক্তব্যের পর তিনি বিদায় নিলে পুনরায় শুরু হয় হট্টগোল। এমন পরিস্থিতিতে কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, আশুলিয়ায় রোববার কোন কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হলে ১৩/১ ধারায় কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে। এ ধারায় কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা যায় ও কাজ না করলে শ্রমিক কোনো মজুরি প্রাপ্য হয় না।
কারখানা বন্ধ করে দিয়ে কোনো মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন উপদেষ্টারা।
সভায় উপদেষ্টাদের আশ্বাস আর নিরাপত্তার মাধ্যমে রোববার সারাদেশে পোশাক কারখানা খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও তা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে সেটি দেখার অপেক্ষায়।
