ফাউন্ড্রি শপে ফার্নেস থেকে গলিত লোহা ডাবুতে ঢালা হয়, আর গলিত লোহা ছাঁচে ঢেলে তৈরি হয় প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ। এই যন্ত্রাংশগুলো চলে যাবে প্রয়োজন মাফিক বিভিন্ন শপে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার প্রতিটি শপে শ্রমিকদের এমন কর্মব্যস্ততাই বলে দেয় সামনে ঈদ। বড় বড় কামরাগুলো লাইনের ওপর যার কাঁধে ভর করে চলে সেই চাকা মেরামতের সি এন্ড ডাব্লু শপে একেকজন ব্যস্ত একেক কাজে। কেউ চাকা পরিষ্কার করছে, কেউ ফিটিং করছে, কেউবা আবার টার্নিং করে নির্দিষ্ট শেইপে আনছে চাকাগুলো। মানুষের কাজ সহজ করেছে দৈত্যাকার সব মেশিন।
রেলের চাকা মেরামত করা হচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। ছবি: এখন টিভি
ঈদের অন্তত মাস দু'য়েক আগেই কর্মব্যস্ততা বাড়ে এ কারখানায়। এবার ফেব্রুয়ারিতে ১১০টি কোচ মেরামতের জন্য এখানে আনা হয়। প্রতিটি কোচ প্রয়োজন অনুযায়ী চলে যায় বিভিন্ন শপে। ক্যারেজ শপে হয় কোচের উপরের অংশের কাজ। এখানে মেঝে থেকে শুরু করে সিট মেরামত, ছাদ থেকে শুরু করে টয়লেটসহ সবকিছুতেই লাগে নতুনত্বের ছাপ।
ক্যারেজ শপের ইনচার্জ মো. মোমিনুল ইসলাম বলেন, 'এখানে আউটসাইট প্যানেলিং, ইনসাইট প্যানেলিং, সিট, বাথরুম, জানালা মেরামত করা হয়।'
পরে পেইন্ট শপে একেকটি কোচে করা হয় একেক রকম রংয়ের কাজ। সেই সাথে চলে ইলেক্ট্রিকের কাজও। একপাশে চলে আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা নিশ্চিতের কাজ। সিটের কাভার তৈরি থেকে শুরু করে মাপ অনুযায়ী বসানো, সবই চলে এক সাথে। তবে কারখানায় রয়েছে লোকবল সংকট। ২ হাজার ৮৫৯ জন লোকবলের বিপরীতে কাজ করছে মাত্র ৮০৭ জন। তাই ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে শ্রমিকেরা দিচ্ছেন বাড়তি শ্রম। স্বপ্রণোদিত হয়েই ওভারটাইমের মাধ্যমে কাজ তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
একজন শ্রমিক বলেন, '১৫ থেকে ২৩০ জন থাকার কথা, সেখানে আসে ৩ থেকে ৪ জন। সেক্ষেত্রে আমাদের কাজের জন্য শারীরিকভাবে অনেক চাপ পরে যাচ্ছে।
বগি শপ ইনচার্জ মো. নিজামুল হক বলেন, 'কোচগুলো সময়মতো মেরামত করে ডিভিশনের হাতে হস্তান্তর করতে হবে। সবাই যেন ঈদ একসাথে আনন্দ নিয়ে করতে পরে। এ প্রত্যাশা নিয়ে আমরা সবাই কাজ করে যাচ্ছি।'
লোকবল বাড়ানোর কাজ চলছে বলে জানান প্রধান বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক মো. সাদেকুর রহমান বলেন, '১১০টি কোচের মেরামত করার আমাদের টার্গেট ছিল। এর মধ্যে অনেকগুলো কোচই মেরামত করে আমরা হস্তান্তর করেছি। আশা করছি আমাদের বন্ধের আগের যে ওয়ার্কিং ডে আছে এর মধ্যে অবশিষ্ট কোচগুলো আমরা রানিং ডিভিশনে হস্তান্তর করবো।'
টানা ৫১ দিনের কর্মতৎপরতায় ১১০টি কোচ ও ১০টি পাওয়ার কার মেরামত হয়ে ঈদযাত্রা সুগম করবে, আশা পশ্চিমাঞ্চল রেলের।



