বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ, ডলারের পতন, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে স্বর্ণের দাম। গেলো ১০ বছরে মূল্যবান এ ধাতুর দাম বেড়েছে আড়াইশো শতাংশের বেশি। শুধু ২০২৫ সালেই বেড়েছে ৫৬ শতাংশ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান বলছে, শিগগিরই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পদে রূপ নেবে স্বর্ণ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০২৬ সালে এ সোনালি ধাতুর দাম অন্তত ২০ শতাংশ বাড়তে পারে। যার আউন্স প্রতি দাম উঠতে পারে ৫ হাজার ডলারে।
ওয়েস্ট পয়েন্ট গোল্ডের সিইও কুইন্টিন মাই বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনেই প্রতিদিন স্বর্ণের দাম বাড়ছে। এরইমধ্যে ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আমার ধারণা আগামী ৬ মাসে এ ধাতুর দাম আরও বাড়বে। সেটি সাড়ে ৪ হাজার ডলার থেকে অবিশ্বাস্য পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।’
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের রেকর্ড দামে আর্থিকভাবে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে ইতালি। মন্দার সময়ও স্বর্ণ বিক্রি না করে রিজার্ভ ধরে রাখায় স্বর্ণ খনিতে পরিণত হয়েছে দেশটি।
আরও পড়ুন:
স্বর্ণের সঙ্গে ইতালির সম্পর্ক বহু পুরনো। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য মতে, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মজুত আছে প্রায় আড়াই হাজার টন স্বর্ণ। যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০ হাজার কোটি ডলার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি স্বর্ণের মজুত আছে যুক্তরাষ্ট্রে, যার পরিমাণ ৮ হাজার টনের বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে জার্মানি, আর তৃতীয় স্থানে ইতালি। এছাড়া চীন পঞ্চম এবং ভারত আছে ৭ নম্বরে।
স্বর্ণের দাম বৃদ্ধিতে স্বর্ণ ক্রয় বেড়েছে উন্নয়নশীল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর। নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের মজুত বাড়াতে ব্যস্ত দেশগুলো। পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান মেটালস ফোকাসের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মোট বার্ষিক চাহিদা বেড়েছে ২৩ শতাংশ।
এদিকে উচ্চমূল্যের কারণে স্বর্ণ ব্যবহারে গ্রাহকের চাহিদা দিন দিন কমছে। ২০২৫ সালে স্বর্ণালংকার তৈরির চাহিদা কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ। ২০২০ সালের করোনা মহামারির পর যা সর্বনিম্ন।
বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের দাম বাড়লেও, প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের তুলনায় বাংলাদেশে দাম কিছুটা বেশি। শুল্কহার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও আমদানি ব্যয়ের ওপর নির্ভর করে স্বর্ণের দাম নির্ধারিত হয়। যার ফলে অন্য দেশের তুলনায় দামের তারতম্য হয়।





