মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পালিত হলো লাইলাতুল কদর

ধর্ম
জীবনযাপন
0

যথাযোগ্য মর্যাদায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পালিত হলো লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে রাতভর নামাজ আদায় করেন লাখো মুসল্লি। জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে সারারাত নামাজ আদায় করেন দুই লাখ ফিলিস্তিনি। তবে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনারা ইব্রাহিমি মসজিদে ঢুকতে দেয়নি ফিলিস্তিনিদের। পবিত্র এই রজনীতে মুসলিম ঐক্যের ডাক দিয়েছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট।

মুসলিমদের কাছে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদরের রাত। পবিত্র এই রজনীতে নাজিল হয় পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন। সারারাত মুসল্লিরা মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকেন। মহান আল্লাহর নৈকট্য ও রহমত লাভের আশায় নফল নামাজ আদায় করেন।

মক্কা নগরীর গ্র্যান্ড মসজিদে মহিমান্বিত এই রাতে প্রায় ২০ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববী কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। আয়োজন করা হয় বিশেষ দোয়ার। ভোরেই মক্কার বিভিন্ন মসজিদে ওমরাহ যাত্রী ও মুসল্লিদের আগমনে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।

জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে শবে কদরের নামাজ আদায় করেন প্রায় দুই লাখ ফিলিস্তিনি। যা এই রমজানে সর্বোচ্চ সংখ্যক মুসল্লি উপস্থিতির রেকর্ড। ইসরাইলি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই লাখো ধর্মপ্রাণ ফিলিস্তিনি আল-আকসা মসজিদে সারারাত ইবাদত করেন। মহিমান্বিত এই রাতে আল আকসা মসজিদের ভেতরে বসে কোরআন তেলাওয়াত করেন বহু মুসল্লি। এ সময় তারা ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তির জন্য দোয়া করেন।

এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের বেথলেহেম শহরের ইসরাইলি চেকপয়েন্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন ফিলিস্তিনিরা। সীমানা পেরিয়ে জেরুজালেমে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি তাদের। শুধু তাই না, পবিত্র রজনীতেও হেবরন শহরের ইব্রাহিমি মসজিদের সবগুলো হল খুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায় ইসরাইলিরা। এ ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক বলছেন ফিলিস্তিনিরা।

স্থানীয় একজন বলেন, 'চেকপয়েন্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও লাভ হয়নি। ইসরাইলিরা আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না।'

ইব্রাহিমি মসজিদে নামাজ পড়তে আসাদের মধ্যে একজন বলেন, 'তারা বার বার আশা দিয়ে আমাদের ভোগান্তিতে ফেলেছে। এখন সবাইকে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে।'

অন্য একজন বলেন, 'ইসরাইলিরা যদি সারারাতও আমাদের আটকে রাখে। তাও আমরা শবে কদরের নামাজ আদায় করবো।'

পবিত্র শবে কদর উপলক্ষ্যে আয়োজিত ৩১তম আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের সম্মানিত করেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সবকিছু করার আশ্বাস দেন। রক্তপাত বন্ধ করে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে মুসলিম বিশ্বকে এক হওয়ার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট সিসি।

মহিমান্বিত এই রাত মুমিন মুসলমানের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত সেরা নেয়ামত। মাহে রমজানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাত বিশেষ করে ২৭তম রোজায় লাইলাতুল কদর পালন করা হয়। যা মুসল্লিদের জন্য সৌভাগ্যের রজনী।

এসএস