সরুয়া
জীবনযাপন
ঈদে সেমাই যেভাবে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠলো
দুধে ভেজা সেমাই, চিকন ঝরঝরে সেমাই, ময়দার সেমাই কিংবা সেমাইয়ের বল–ঈদ যেন পূর্ণতা সেমাইয়ের বাহারি পদে। রসনার তৃপ্তি মেটাতে সেমাইয়ের জুড়ি নেই।

ঈদের দিনে সকালে সেমাই মুখে দিয়ে নামাজে যাওয়ার চল আমাদের দীর্ঘদিনের। সামনে অন্য মিষ্টি দ্রব্য যা ই থাকুক না কেন সেমাই ছাড়া কেমন যেন পানসে মনে হয় সব। শুধু বাংলাদেশ নয়, পশ্চিমবঙ্গেও সমানভাবে জনপ্রিয় সেমাই। এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেন- পাকিস্তান, ভারত এবং আফগানিস্তানেও সেমাইয়ের প্রচলন দেখা যায়।  

 

তবে বাংলাদেশে সেমাই কিভাবে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠলো?

জানা গেছে, ময়দার তৈরি খাবারের প্রচলন শুরু হয় মূলত মধ্যযুগ থেকে। ইতিহাসখ্যাত বীর আলেকজান্ডার ভারতীয় উপমহাদেশ জয় করতে এসে ময়দার তৈরি খাবারের সাথে পরিচয় ঘটে। কিন্তু তখনও সেমাইয়ের সাথে সেমাইয়ের সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের পরিচয় ঘটেনি।    

 

তবে সেমাই শব্দটি কিন্তু মৌলিক কোন শব্দ নয়। সেমিদালিস থেকে সেমাইয়ের উৎপত্তি। সেমিদালিস শব্দের মূল অর্থ হলো ময়দা। যদিও ময়দা ফারসি শব্দ। শব্দের গায়ে যে দেশের ট্যাগলাইনই থাক না কেন সেমাই শব্দটা আসলে ভারতীয়।

 

সেমাইয়ের প্রচলন কবে কীভাবে এই উপমহাদেশে শুরু হলো ঈদের সাথে সম্পর্কটা কীভাবে তৈরি হলো তার হদিস পাওয়াটাও বেশ মুশকিল। তবে ধারনা করা হয়, ময়দা জাতীয় খাবারে চিনি বা মিষ্টি মিশ্রনের বিষয়টি এসেছে পারস্য থেকে। কারণ মধ্যযুগে এই উপমহাদেশে ফারসিদের প্রভাব লক্ষ করা যায়।  

 

সেমাইয়ের নাম, আকার-আকৃতি এবং রন্ধনপ্রণালী একেক দেশে একেকরেকম হলেও পার্শিয়ানদের হাত ধরে এটি ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বেশির ভাগ অঞ্চলেই সেমাই মিষ্টিজাতীয় খাবার হিসেবে পরিচিত।

 

সেমাইয়ের প্রচলন কবে কীভাবে এই উপমহাদেশে শুরু হলো ঈদের সাথে সম্পর্কটা কীভাবে তৈরি হলো তার হদিস পাওয়াটাও বেশ মুশকিল। তবে বলা যায় মিষ্টিদ্রব্য মুখে দিয়ে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ পড়তে যাওয়ার যে আদবের কথা ইসলাম ধর্মে বলা অছে সেখান থেকেই মিষ্টিদ্রব্য হিসেবে সেমাইয়ের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।  

 

প্রাচীনকাল থেকেই সেমাই তৈরি করা হতো হাতে। এখনো দেশের বিভিন্ন স্থানে হাতে তৈরি সেমাই বানানোর চল আছে। সময়ের আবর্তনে আস্তে আস্তে প্যাকেটজাত সেমাই সহজলভ্য হয়। বাংলাদেশে সেমাইয়েরও রকমফের পাওয়া যায় বাজারে। তবে বাংলাদেশে সেমাইয়ের স্বাদ একটাই। তা হলো মিষ্টি।

 

 

 

কেফা