ব্রাজিলের আমাজন বনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বুরিতিকুপু শহর ধীরে ধীরে পৃথিবী গিলে খাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহে বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে, যেগুলোর গভীরতাও রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পুরো শহরেই জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এই শহরে বাস অন্তত ৫৫ হাজার মানুষের। এরমধ্যে এক হাজারের বেশি মানুষ ভিটেমাটি নিয়ে পড়ে গেছে চরম ঝুঁকিতে।
স্থানীয় একজন বলেন, '২০১৭ সালের শেষ দিক থেকে বলছি, এই ভবিষ্যদ্বাণী অনেক আগের। কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সাধারণ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছে। রাজ্য কিংবা কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।'
স্থানীয় অন্য একজন বলেন, 'খুবই বিপজ্জনক অবস্থা। কোথায় কখন গর্ত হয়ে যাবে, কেউ জানে না। যখন এই গর্ত হয়েছে, বাড়ি থেকে সেই দূরত্ব খুব কম ছিল। আমগাছের কাছে এই গর্তে পুরো বাড়ি কেঁপে উঠে। সাহায্য প্রয়োজন।'
এই সিঙ্কহোলে এখন পর্যন্ত কয়েকটি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। বৃষ্টির সময় এখানকার পরিস্থিতি হয় আরও ভয়াবহ। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যখন তখন যেখানে সেখানে মাটিতে এতো বড় গর্ত হয়ে যাবে। বৃষ্টিতে মাটি সরে গেলে আরও দেবে যায় এলাকাগুলো। সেইসঙ্গে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই ঘরবাড়ি বানানো এবং বননিধনও প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের বড় কারণ।
ভূ-তত্ববিদ মার্সেলিনো ফারিয়াস বলেন, 'এটা অবশ্যই প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কিন্তু মানুষের কর্মকাণ্ড পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করেছে। রাস্তাঘাট বানানো, বৃষ্টির পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত করায় প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে গেছে। বুরিতিকুপুতে পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে। এখানে বৃষ্টিপাত বেশি হচ্ছে, মাটি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, বৃষ্টির কারণে মাটি ক্ষয় বেশি হচ্ছে।'
ব্রাজিলের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে অতিরিক্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এতে করে মাটি দেবে আরও বেশি সিঙ্কহোল তৈরির শঙ্কা রয়েছে।