দক্ষিণ আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

বলিভিয়ায় সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ায় স্থানীয় সময় বুধবার সেনা অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি এ ঘটনায় জড়িত সেনাপ্রধান জেনারেল জুয়ান হোসে জুনিগাকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই মূহূর্তে প্রেসিডেন্ট ভবনসহ রাজধানী লাপাজ স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিয়োগ দেয়া হয়েছে নতুন সেনাপ্রধান।

বুধবার (২৬ জুন) হঠাৎ বলিভিয়ার রাজধানী লাপাজের ঐতিহাসিক প্লাজা মুরিলো চত্বরে সাঁজোয়া যানসহ জড়ো হন সেনা সদস্যরা। এরপর সেখানে থাকা প্রেসিডেন্টের বাসভবনের প্রধান ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টা চালানো হয়। এছাড়া, শহরটির গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনেও অবস্থান নেয় অভ্যুথানকারী সেনারা। সশস্ত্র বাহিনী দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে ঘোষণা দেন সেনাপ্রধান জেনারেল জুয়ান হোসে জুনিগা। এতে মূহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তাপ।

এ অবস্থায় তাৎক্ষনিকভাবে বিদ্রোহী সেনাপ্রধানকে বরখাস্ত করেন প্রেসিডেন্ট লুইস আর্স। এরপর তাকে ছাড়াও আরেক সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে হোসে উইলসন সানচেজকে। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি সেনা সদস্যদের ব্যারাকে ফিরে যাওয়া নির্দেশ দেন। তার হুকুমে ট্যাংকগুলো নিয়ে প্রেসিডেন্টের বাসভবন এলাকা ছেড়ে যান সেনারা। বর্তমানে স্থানীয় পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মুরিলো চত্বর এলাকা। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি।

স্থানীয়রা বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক বিকেল। শুধু এই কারণে নয় যে জনগণ প্লাজা মুরিলো পুনরায় দখল করেছে। পাশাপাশি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, এটি একটি বড় কারণ। আমি বিশ্বাস করি বলিভিয়ার জনগণ এখন স্বস্তিতে থাকবেন। এমনকি সমস্ত বলিভিয়ান অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে এক হচ্ছে।

বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট লুইস আর্স বলেন, 'অভ্যুত্থানের সাথে জড়িতরা বলিভিয়ার জনগণকে অবাক করতে চেয়েছিল। আমরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি এবং জনগণও এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়েছে। এর জন্য বলিভিয়ার জনগণকে ধন্যবাদ জানাই।'

২০২৫ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশটির সেনাবাহিনী এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করায় এর নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভা মোরালেস। তিনি শহর ও গ্রামের সব মানুষকে সেনাঅভ্যুথানের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে এক বিবৃতিতে দেশের গণতন্ত্র ও নিরাপত্তার স্বার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে সেনাবাহিনীর এমন অপেশাদার কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলিন্ডা সসা লুন্ডা। জনগণও চায় না এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক।

এদিকে বলিভিয়ায় সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ।