প্রথমবারের মতো মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিলেন ডেমোক্র্যাট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট টিম ওয়ালজ ও রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের মঞ্চে উপস্থিত হন দুই রানিং মেট। ৯০ মিনিটের বিতর্কের বেশিরভাগ সময় ব্যক্তিগত আক্রমণ করে একজন আরেকজনকে ঘায়েল করার চেষ্টায় ছিলেন।
মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত, মার্কিন অর্থনীতি, অভিবাসন, গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে বিবাদে জড়ান দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। শুরুতে ডেমোক্র্যাট রানিং মেট ওলাজের অবস্থান কিছুটা নড়বড়ে ছিল। অন্যদিকে রিপাবলিকান রানিং মেট ভ্যান্স ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। যদিও ৪০ বছর বয়সী ভ্যান্সকে ট্রাম্পের মামলা নিয়ে কুপোকাত করার চেষ্টা করেছেন ৬০ বছর বয়সী ওয়ালজ।
আন্তর্জাতিক বিরোধ ও চলমান মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে প্রার্থীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন মডারেটর। জবাবে মিত্রদের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন দু'জনই। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করায় ট্রাম্পের সমালোচনা করেন ওয়ালজ।
টিম ওয়ালজ বলেন, 'মিত্ররা যখন দেখবে ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সখ্যতা গড়েছে। তখন এক ধরনের অস্থিরতা শুরু হবে মার্কিন জনগণের মধ্যে।'
রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জেডি ভ্যান্স বলেন, 'ইসরাইলের সুরক্ষায় কী করা দরকার সেটি নির্ভর করছে এই মুহূর্তে তাদের কী প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের অবশ্যই সমর্থন করা উচিত। তারা যে দেশেরই হোক। আমাদের লড়াই হবে দুষ্টদের বিরুদ্ধে।'
জেডি ভ্যান্সকে ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গা নিয়ে আক্রমণ করেন ওয়ালজ। ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর অভিযোগ, ট্রাম্প এবারও হেরে গেলে নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করবেন। এদিকে, এই ইস্যুটি অনেকটা এড়িয়ে গেছেন রিপাবলিকান রানিং মেট।
টিম ওয়ালজ বলেন, 'এ ধরনের ঘটনা মার্কিন গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও দাবি করছেন তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজিত হননি। এটি তার অক্ষমতাকে প্রকাশ করে।'
জেডি ভ্যান্স বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য অনন্য উদাহরণ। যা গত ২৫০ বছর ধরে রিপাবলিকানরা ধরে রেখেছে। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই রিপাবলিকানরা ক্ষমতায় আসবে।'
বাইডেনের শাসনামলে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের কড়া সমালোচনা করেন ভ্যান্স। তার প্রশ্ন ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও কামালা হ্যারিস মুল্যস্ফীতি, অভিবাসন ও অর্থনীতির দিকে নজর দেননি। মধ্যবিত্তের সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অন্যদিকে, ওয়ালজ বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অস্থিতিশীল নেতা এবং কোটিপতিদেরই তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
আসন্ন নির্বাচনের অন্যতম ইস্যু গর্ভপাতের অধিকার নিয়েও বিতর্কে জড়ান ওয়ালজ ও ভ্যান্স। ওয়ালজ তার বক্তব্যে বলেন, গর্ভপাতের অধিকার কেড়ে নিয়ে নারীদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চায় রিপাবলিকানরা। ভ্যান্সের বক্তব্য, গর্ভপাতের বিধিনিষেধকে তিনি সমর্থন করেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের বিতর্ক নির্বাচনে খুব একটা প্রভাব ফেলার ইতিহাস নেই। তবে ডেমোক্র্যাট দলের টিকিটে ওয়ালজ কিছু অংশে আকর্ষণ কেড়েছেন। ভ্যান্সের আত্মবিশ্বাসী ও শক্তিশালী পারফরম্যান্স রিপাবলিকানদের উৎসাহ যোগাবে।