উত্তর আমেরিকা
বিদেশে এখন
0

টুইন টাওয়ারে হামলার পর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে কতটুকু সফল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ২৩ বছর আজ। নানা কর্মসূচিতে দিনটি স্মরণ করছেন মার্কিনরা। সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার দায় নিতে রাজি হলেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে না বলে শর্ত দিয়েছেন তিন অভিযুক্ত। ইতিহাসের বিভীষিকাময় ওই হামলার পর বিশ্বব্যাপী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালালেও এখনও অনেকের প্রশ্ন, বিশ্বব্যাপী কতটা সফল মার্কিন অভিযান।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার। সেদিন বিশ্ববাসী দেখে এক বীভৎস ভোর। বিশ্বরাজনীতির কেন্দ্রস্থল যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দুটি উড়োজাহাজের আঘাত চমকে দেয় গোটা বিশ্বকে।

এদিন চারটি বিমান একসাথে ছিনতাই করে নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়দা। প্রাণ হারান প্রায় ৩ হাজার মানুষ। আহত হন প্রায় ৬ হাজার।

বিভিন্ন হিসেব বলছে, নাইন ইলেভেন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১২শ কোটি মার্কিন ডলার। যার মধ্যে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি পরিশোধ করেছিল প্রায় সাড়ে ৯শ কোটি ডলারের দাবিনামা। শুধু বিধ্বস্ত ভবন পরিষ্কার করতে ব্যয় হয়েছে ৭৫ কোটি ডলার। হামলা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি ডলার।

এদিকে, মৃত্যুদণ্ড এড়াতে দীর্ঘ ২৩ বছর পর দোষ স্বীকার সাপেক্ষে বিচার কাজ শুরু করার লক্ষ্যে ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে মার্কিন প্রসিকিউটররা।

খালিদ শেখ মোহাম্মদ, ওয়ালিদ বিন আত্তাস ও মোস্তফা আল হাউসাউই–এই তিনজনই নিজেদের দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছেন। বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে না এবং সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হবে, এমন শর্তেই তারা ওই চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছেন।

নাইন ইলেভেন হামলার পর, আল-কায়েদা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূল করতে মরিয়া হয়ে উঠে যুক্তরাষ্ট্র। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বযুদ্ধে নামেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই অভিযানে যোগ দেয় আন্তর্জাতিক মিত্র জোট।

২০০১ সালের শেষদিকে আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালায় মার্কিন সেনাবাহিনী। আফগানিস্তানে যুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের ইতিহাসে দীর্ঘ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র।

তালেবান ও কথিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদাকে নির্মূলে এবং ৯/১১ হামলার মাস্টারমাইন্ড ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার এই যুদ্ধে সহযোগী হিসেবে অংশ নেয় ইউরোপীয় সামরিক জোট ন্যাটো। আফগানিস্তানের পর ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে মার্কিন প্রশাসন।

যদিও আফগানিস্তান যুদ্ধ শুরুর এক দশক পর পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে খোঁজ মেলে মাস্টার মাইন্ড ওসামা বিন লাদেনের। পরে সেখানেই ঝটিকা অভিযানে তাকে হত্যা করে মার্কিন কমান্ডোরা।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত থাকলেও এখনও বন্ধ হয়নি আল কায়দার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। তৈরি হয়েছে 'ইসলামিক স্টেট' নামে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে পড়েছে আফ্রিকায়ও। মালি, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, ও সোমালিয়ায়ও নতুন নতুন সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে, যাদের বেশিরভাগেই আল কায়দা ও ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্য।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর