আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি বছর ফের নাম লিখিয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের দৌঁড়ে। প্রচারণা শুরুর পর থেকেই একের পর এক মন্তব্য করে বিতর্কের ঝড় তুলতে শুরু করেছেন। এবার ফ্লোরিডায় এক নির্বাচনী সমাবেশে করা এক মন্তব্যে শোরগোল উঠেছে পুরো দেশে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, 'খ্রিস্টানরা বেরোন এবং ভোট দিন। এবারই। এরপর আর এ কাজ করতে হবে না আপনাদের। আর চারটা বছর? বলুন তো কী? সব ঠিক হয়ে যাবে। সব ভালো হবে। আপনাদের আর ভোট দিতে হবে না।'
এ মন্তব্যে ঠিক কী বুঝিয়েছেন ট্রাম্প, তা স্পষ্ট নয়। ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের মুখপাত্র স্টিভেন শংও কোনো ব্যাখ্যা দেননি। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে আবার মনোনয়ন পাওয়া ট্রাম্পের এ মন্তব্যকেই এখন হাতিয়ার করেছে বিরোধী ডেমোক্র্যাট শিবির। প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পের দাবি, মন্তব্যটি নিছক মজা করে বলেছিলেন তিনি। যদিও তার শুক্রবারের ভাষণে মজার জায়গাটা ধরতে পারেননি কেউই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও জানান, 'আমার প্রিয় খ্রিস্টানরা। আমি আপনাদের ভালোবাসি। আমি নিজেও খ্রিস্টান। ভালোবাসি আপনাদের। বের হোন। আপনাদের বের হতে হবে এবং ভোট দিতে হবে। চার বছর পর থেকে আর ভোট দিতে হবে না আপনাদের। এতো ভালোভাবে সব ঠিক করে দেবো আমরা যে আর আপনাদের ভোট দিতে হবে না।'
ডেমোক্র্যাট শিবিরের অভিযোগ, ট্রাম্প গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর ফল উল্টে দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি, যার জেরে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে নজিরবিহীন রক্তক্ষয়ী হামলার সাক্ষী হয় বিশ্ব।
এবার হোয়াইট হাউজে ফিরলে এটি হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় ও শেষ মেয়াদ। টানা হোক বা বিরতি দিয়ে, সংবিধান অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে এক ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট হতে পারেন সর্বোচ্চ দু'বার। গেল মে মাসেও এক সম্মেলনে দুই মেয়াদের বেশি দেশ শাসনের আভাস দেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দুই মেয়াদের বেশি নেতৃত্ব দেয়া একমাত্র প্রেসিডেন্ট, ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের কথা। ১৯৩৩ সালে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট হন রুজভেল্ট, ১৯৪৫ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় ১৬ বছর ছিলেন ক্ষমতায়। তার শাসন শেষ হবার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দু'মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন বলে নিয়ম বেঁধে দেয়া হয়।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাইডেনের বিপরীতে ট্রাম্পের প্রতি জনসমর্থনের পাহাড় অনেকটাই ভেঙে পড়েছে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের সম্ভাবনা জোরদারের পর।