বিতর্কের জন্য প্রস্তুত বাইডেনের প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে লুফে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন নির্বাচনে কয়েক দশক ধরে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মধ্যে বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিতর্কের মধ্য দিয়েই প্রার্থীদের সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয় ভোটারদের।
আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচার এখন তুঙ্গে রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রথম দফার বিতর্কে স্থানীয় সময় আজ রাত ৯টায় মুখোমুখি হচ্ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের আয়োজিত ৯০ মিনিটের মুখোমুখি বিতর্কে থাকছে না কোনো শ্রোতা।
এতদিন দূর থেকে বাক্যবাণে ঘায়েল করার চেষ্টা করেছেন একজন আরেকজনকে। এবার লড়াই হবে মুখোমুখি। জনমত জরিপে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সমাবেশেও পরস্পরকে আক্রমণ করেছেন ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনের বয়স এখন ৮১ বছর। এটিকে আক্রমণের অস্ত্র বানাতে পারেন ট্রাম্প। বয়স্ক বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়েও খোঁচা দিতে ছাড়বেন না রিপাবলিকান এই প্রার্থী। ট্রাম্পের বয়সও ৭৮ বছর। তাই এই ইস্যুতে হয়তো খুব একটা সুবিধা করতে পারবেন না তিনি। এদিকে, ফৌজদারি মামলা ও ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গা নিয়ে ট্রাম্পকে আক্রমণের সুযোগ নেবেন বাইডেন। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা নিয়েও এর আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।
নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এমেরিটাস অধ্যাপক অ্যালান শ্রোডার বলেন, 'বাইডেন বহু বছর ধরে একই লোকদের নিয়ে কাজ করেছেন। বিতর্কে বাইডেনের অভিজ্ঞতার ঝুলি অনেক বড়। তবে, ট্রাম্প তাকে কাবু করতে ছেলে হান্টার বাইডেনের মামলার বিষয়টি তুলে আনতে পারেন।'
দুই প্রার্থীর বিতর্কে গুরুত্ব পাচ্ছে নানা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ইস্যু। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, জ্বালানি তেলের উৎপাদন, ঋণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় বার বার উঠে এসেছে মূল্যস্ফীতির বিষয়টি। তবে বাইডেনের আমলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ১৫ মিলিয়ন।
রিপাবলিকান প্রার্থীর বিতার্কিক বিশেষজ্ঞ ব্রেট ও'ডোনেল বলেন, 'বিতর্কে জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। তাদের বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এমন বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। ভোটাররা মূলত তিনটি কারণকে প্রাধান্য দেবে। প্রার্থীর যোগ্যতা, তাদের হয়ে কথা বলা এবং ভোটারদের কাছে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা।'
বাণিজ্য ইস্যুও উঠে আসবে তাদের বিতর্কের মাঝে। দু'জনের শাসনামলেই চীনের ওপর শুল্ক বসিয়ে বিলিয়ন ডলার আয় করেছে মার্কিন সরকার। সেই সঙ্গে ঋণের বোঝাও বেড়েছে মার্কিন অর্থনীতিতে। গত সাড়ে সাত বছরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। যার সিংহভাগ বেড়েছে ট্রাম্পের আমলে।
১৯৮৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্দলীয় কমিশন সিপিডি নির্বাচনে বিতর্কের আয়োজন করে আসছে। দ্বিতীয় বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর। আয়োজক এবিসি।