কলাম্বিয়ার পর এবার রণক্ষেত্র ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার (১ মে) ফিলিস্তিনপন্থীদের ওপর ইসরাইলপন্থীদের অতর্কিত হামলায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। আহত শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
বুধবারের সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাস ঘিরে রেখেছে পুলিশ। তবে ঘটনাস্থলে যাতে পুলিশ সদস্যরা প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য মানবঢাল তৈরি করেছে শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস খালি করার আল্টিমেটাম শেষ হলেও স্লোগানে স্লোগানে শিক্ষার্থীরা জানান দিচ্ছে নিজেদের অবস্থান। হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা ও মাথায় কিফায়া পরিধান করা শিক্ষার্থীদের সমাবেশে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় যেন পরিণত হয়েছে এক টুকরো ফিলিস্তিনে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযানের পর ক্যাম্পাস এখন পুলিশের দখলে। বাতিল করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম। ১৭ মে পর্যন্ত পুলিশকে ক্যাম্পাসে থাকার অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
তারা বলেন, আমরা জানি স্বাধীনতা আসছে। কারণ শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি স্টাফ সবাই আমরা ঐক্যবদ্ধ। সবাই জড়ো হয়ে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়কে পুনঃনির্মাণ করবো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর আমাদের আস্থা নেই। অবিলম্বে পুলিশ প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাস খুলে দিতে হবে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অপরাধীরা যোগ দিয়েছে, এই দাবিতে অনড় নিউইয়র্ক প্রশাসন। জোরপূর্বক ক্যাম্পাস খালি করার পর শহরের মেয়র জানান, ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে শিক্ষার্থীদের উস্কানিদাতাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, 'কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। ছাত্র ও অছাত্রদের আমরা আলাদা করার চেষ্টা করছি। গতকাল জানিয়েছি, আন্দোলনে বহিরাগতদের উপস্থিতি ছিলো যারা ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছিলেন।'
গাজায় যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফোর্ডহ্যাম, উইসকিন্সন, বাফেলো ও টেক্সাসসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। নির্যাতন উপেক্ষা করেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় মার্কিন শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়েছে গাজাবাসী।
উপত্যকার দেইর আল বালাহে কয়েকশ ফিলিস্তিনি এক হয়ে জানান, ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ না হলেও গাজার মানুষ মনে রাখবে এই আন্দোলনকে।