সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার উত্তরে আলেপ্পো দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। ২০১২ সালে বিদ্রোহী বাহিনী হায়াত তাহরির আল-শাম আলেপ্পোর পূর্ব অংশের অর্ধেক দখলে নেয়।
পরে ২০১৬ সালে রুশ বিমান অভিযানে শহরটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে যায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকারি বাহিনীর হাতে। ধীরে ধীরে সিরিয়ার ওপর আধিপত্য বিস্তার করেন প্রেসিডেন্ট আসাদ।
শুরুর দিকে আল কায়েদা ও আইএসের সহযোগিতায় গড়ে ওঠে বাহিনীটি। ২০১৬ সালে আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে নতুন রূপে আবির্ভূত হয় হায়াত তাহরির আল-শাম নামে। জাতিসংঘ এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে আলেপ্পো শহর নিজেদের দখলে নেয় বিদ্রোহী বাহিনী এইচটিএস। যারা প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকারি বাহিনীর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী।
সাম্প্রতিক আক্রমণকে বিদ্রোহী বাহিনী প্রতিরক্ষা হিসেবে দাবি করেছে। বলছে, জনগণ ও দেশকে রক্ষায় আলেপ্পোর দখলে লড়াই করেছে তারা।
রাশিয়ার সহায়তায় বেশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী। এছাড়া শিয়া পরিবারের আসাদ ক্ষমতায় থাকতে ইরানের ওপর নির্ভর করে আছে। আসাদকে প্রায় ৮০,০০০ সেনা সরবরাহ করে ইরান। মূলত এই দুই দেশের ওপর ভর করে সিরিয়ার প্রায় ৭০ শতাংশ ভূখণ্ড নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে আসাদ সরকার।
এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে হামাস ও হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনীর চলমান সংঘাতে সিরিয়া অনেকটা আড়ালে পড়ে যায় ইরানের। এছাড়া, ইউক্রেন যুদ্ধে মনোযোগ দেয়ায় রাশিয়াও যথেষ্ট শক্তি জোগান দিতে পারছে না বাশার আলা আসাদকে। এদিকে ইসরাইলও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সিরিয়ায়।
কয়েক বছরের স্থিরতার পর আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসন ব্যবস্থা। যা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে। আরব বসন্তে কোণঠাসা হয়ে পড়া আসাদ সরকার রক্ষা পেলেও এবার নতুন করে চাপে পড়েছে। তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সহযোগী আরব রাষ্ট্রগুলোও।