পোল্যান্ড, রোমানিয়ার পর এবার ন্যাটোর আরেক ইউরোপীয় দেশ এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। স্থানীয় সময় গতকাল (শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গালফ অব ফিনল্যান্ডের ভাইনডলু দ্বীপের আকাশে প্রবেশ করে রাশিয়ার তিনটি মিগ-থার্টি-ওয়ান যুদ্ধবিমান। কোনো ফ্লাইট প্ল্যান জমা না দিয়ে এবং ট্রান্সপন্ডার বন্ধ রেখেই ১২ মিনিট ধরে দেশটির আকাশসীমায় বিমানগুলো অবস্থান করেছে বলে জানিয়েছে এস্তোনিয়া।
এসময় অঞ্চলটির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও রাখেনি রুশ পাইলটরা। পরে ঝুঁকি মোবিলায় ন্যাটোর বাল্টিক এয়ার প্যাট্রোল মিশনে থাকা ইতালীর বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান ধাওয়া দিলে রুশ বিমানগুলে চলে যায়। এটিকে স্পষ্ট উস্কানি হিসেবে আখ্যা দিয়ে ন্যাটো মিত্রদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছে এস্তোনিয়া। এছাড়া সম্মিলিত প্রতিরক্ষা নিশ্চিতে ন্যাটোর আর্টিকেল-ফোর অনুযায়ী জরুরি পরামর্শের জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।
এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গাস ছাহকনা বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ হয়ে আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে যে আমরা বাল্টিক রাজ্য এবং পূর্ব দিকের নিরাপত্তার জন্য কী করতে পারি। কারণ স্পষ্টতই ন্যাটোর পরীক্ষা নিচ্ছেন পুতিন। আকাশসীমা লঙ্ঘন করে নতুন স্তরের উস্কানি শুরু করেছে রাশিয়া। তাই আমাদের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে।’
ন্যাটো মুখপাত্র অ্যালিসন হার্ট ঘটনাটিকে রুশ সরকারের বেপরোয়া আচরণের নতুন উদাহরণ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আর রাশিয়ার উস্কানিমূলক বেপরোয়া আচরণের জবাব দৃঢ়ভাবে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরজুলা ফন ডার লাইয়েন। এমনকি ইউক্রেন ছাড়াও আশপাশের দেশগুলো জন্য ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় রাশিয়া প্রতি দুর্বলতা দেখানোর সুযোগ নেই বলেও সতর্ক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কাল্লাস।
আরও পড়ুন:
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতি প্রধান কাজা কাল্লাস বলেন, ‘দুর্বলতা এমন কিছু যা রাশিয়াকে আরও কিছু করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তারা কেবল ইউক্রেনের জন্যই নয়, রাশিয়ার আশেপাশের সমস্ত দেশের জন্যও ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তাই, আমাদের আরও চাপ দিতে হবে যাতে রাশিয়াও শান্তি চাইতে বাধ্য হয়। যাতে আলোচনার টেবিলে এসে নিজেকে সংযত করে।’
এদিকে এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় রুশ যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের নিন্দা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। একে অগ্রহণযোগ্য বলেও আখ্যা দেন তিনি। এছাড়া এ ঘটনায় নাখোশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও।
ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি এসব ঘটনা পছন্দ করি না। কারণ এতে বড় সমস্যা হতে পারে।’
২০২২ সালে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর তৃতীয়বারের মতো ন্যাটো আকাশসীমায় ড্রোন ও যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের মধ্য দিয়ে উত্তেজনার পারদ আরও বাড়িয়ে দিলো মস্কো। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে রাশিয়া বলেছে, আন্তর্জাতিক আকাশসীমা মেনেই উড়েছে তাদের বিমান।





