মধ্য ইউরোপের চেক রিপাবলিকে হঠাৎ করেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় হেলিকপ্টার দিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ। উত্তর পূর্বাঞ্চলের শহর অস্ট্রাভার অড্রা ও অপাভা নদীর মিলনস্থলে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গেছে শহরের শিল্পাঞ্চল। অস্ট্রাভার পেত্রোকভিচে পানি নেমে যাওয়ায় চলছে ধ্বংসস্তুপ সরানোর কাজ। সোমবার পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে ছিল অস্ট্রাভার অনেক এলাকা। গেল দুই দশকে ইউরোপে এতো ভয়াবহ বন্যা দেখেনি কেউ। চেক রিপাবলিকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন অনেক ঘরবাড়ি।
বন্যার্তদের মধ্যে একজন বলেন, 'গতকালও এখানে পানি ছিল। আজ কাজ করতে এসেছি। এতো কাঁদামাটি আগে দেখিনি ।'
বন্যার্তদের মধ্যে আরও একজন বলেন, 'ভয় লেগেছে । শতকের মধ্যে এমন বন্যা কেউ দেখেনি মনে হয় ৷ এতো পানি, তার ওপর পানি হঠাৎ আমার বাড়ির কাছে চলে আসলো।'
এদিকে পোল্যান্ডেও নিসা শহরে ক্লোদজকা নদীর পানি বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশের আশঙ্কায় সমানে ফেলা হয়েছে বালুর বস্তা। পোল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের এই শহরের ৪০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা কার্যালয়। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ২৬ কোটি ডলারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল ঘোষণা করেছে পোল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। বাঁধ ভেঙে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে পোল্যান্ডের ঐতিহাসিক শহর লাদেক দ্রোজ। স্থানীয়রা বলছেন, 'শহরে এমন সর্বনাশ বহু বছর দেখেননি তারা।'
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, 'শহরের জন্য এই লোকসান অপূরণীয়। সেতুগুলো ভেঙে গেছে। এই শহর পুনর্গঠনের কোন তহবিল নেই । সর্বনাশ দেখছি।'
আরেকজন বলেন, 'আমরা তিনটা বন্যা দেখেছি। কিন্তু এই বন্যা অন্য রকম। এতো পানি লাদেকে আগে কখনো দেখিনি।'
এদিকে দানুবে নদীর পানি যেন লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য বালুর বস্তা ফেলে পানি আটকাচ্ছেন হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষ। গেলো সপ্তাহে এই বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চেক রিপাবলিক আর হাঙ্গেরি সীমান্ত। বন্যায় বিপর্যস্ত রোমানিয়া আর অস্ট্রিয়াও। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব বেশ দ্রুতগতিতে পড়ছে ইউরোপ মহাদেশের ওপর। যে কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টি, বন্যা আর ঝড়ের কবলে পড়ছে এই মহাদেশ।
এদিকে টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে ভয়াবহ বন্যায় কবলে পড়েছে মিয়ানমার। জাতিসংঘ বলছে, সেনাশাসিত অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশটিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ৬ লাখের বেশি মানুষ। এর আগে টাইফুন ইয়াগির আঘাতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয় চীন, ভিয়েতনাম।