দু'বছরেরও বেশি সময় ধরে শুধু রুশ অভিযান মোকাবিলা করে দেশ রক্ষায় লড়াই করে যাচ্ছে ইউক্রেন। এবার এর পাশাপাশি মস্কোর ভূখণ্ডেও হামলা জোরালো করার পথে এগুচ্ছে কিয়েভ। ৬ আগস্ট রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলের সুডজা শহরে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে এই যাত্রা শুরু করে ইউক্রেন। ওইদিন ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান নিয়ে প্রায় এক হাজার ইউক্রেনীয় সেনা এই রুশ সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করে। সেখানে এখনও তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
এখানেই শেষ না, মস্কোর যুদ্ধবিমান ব্যবহারের সক্ষমতা কমাতে তাদের বিমানঘাঁটিগুলোকেও হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে কিয়েভ। গাইডেড বোমা ও যুদ্ধবিমান মজুদ রাখা হয় এমন একটি ঘাঁটিতে সফল হামলার দাবিও করা হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলমান অভিযানের মধ্যেই, রুশ ভূখণ্ড টার্গেট করে ইউক্রেনের এসব পদক্ষেপ সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে, মস্কোকে অবশ্যই তার অভিযানের পরিণতি ভোগ করতে হবে। এমনকি রাশিয়ার সীমান্ত অঞ্চল ধরে রাখতে মার্কিন সহায়তাও চেয়েছে ইউক্রেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে মুদ্রা বাজারে বড় ধরনের ধাক্কা খেল রাশিয়া। ডলারের বিপরীতে আরও দুর্বল হয়েছে রুশ মুদ্রা রুবল। মস্কো স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার দেশটির মুদ্রা মান কমেছে ২.৭ শতাংশ। কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের হামলাই এ পতনের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, রুশ নাগরিকদের মনে ভয়ের বীজ বুনতে সক্ষম হয়েছে কিয়েভ। যার কারণে, সীমান্ত এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছেন বেসামরিক নাগরিকরা। তাদের জন্য ২০টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে নিশ্চিত করেছে কুরস্ক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ।
ইউক্রেনের নতুন যুদ্ধ পরিকল্পনা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যে তার আভাসও মিলছে। জরুরি বৈঠক করতে দেখা গেছে পুতিনকে। বড় ধরনের 'উস্কানি' আখ্যা দিয়ে, ইউক্রেনের হামলা ঠেকাতে নির্দেশনাও দেন তিনি। এমনকি মজুত থাকা সেনাদের যুদ্ধের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়াও আহ্বানও জানানো হয়। ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে মোকাবিলায় সীমান্ত অঞ্চলটিতে শক্তিশালী অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।
এ অবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে উত্তেজনা চরম পর্যায় পৌঁছেছে। ইউক্রেনীয় ভূমি দখলের অভিযানের তীব্রতাও বাড়িয়েছে রুশ বাহিনী। ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর কোস্তিয়ানতিনিভকাতে। এতে বহু মানুষ হতাহতের শিকার হয়েছেন।