ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের মাঝে বেড়েছে বিয়ে না করার ঝোঁক

ভারতের তরুণ-তরুণী
ভারতের তরুণ-তরুণী | ছবি: সংগৃহীত
0

সন্তান জন্ম দিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন ভারতের তরুণ-তরুণীরা। আবার উল্লেখযোগ্য একটা অংশে বেড়েছে বিয়ে না করার ঝোঁক। যার প্রভাব পড়ছে প্রজনন হারে। এদিকে ২০৫০ সালে দেশটিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা পৌঁছতে পারে ৩৪ কোটিতে। এমনই ভয় জাগানিয়া তথ্য উঠে এসেছে স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের প্রতিবেদনে।

চীনকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা এখন ভারতের। তবে মাতৃত্বে অনীহা থাকায় বড় ধাক্কা লেগেছে দেশটির প্রজনন হারে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ায় দেখা দিয়েছে উভয় সংকট। সম্প্রতি এমনই এক ভয় ধরানো প্রতিবেদনে কাঁপন ধরেছে গোটা ভারতে।

১৯৭০ সালে ভারতীয় নারীরা গড়ে পাঁচটি সন্তান জন্ম দিলেও ৫০ বছরে তা নেমে এসেছে ১.৯ শতাংশে। ভারতে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান অনুপাতে বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে ভারতীয় নারীদের প্রজননের পরিমাণ। এর নেপথ্যের কারণ তরুণ দম্পতিদের মধ্যে সন্তান নিতে অনীহা।

স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমের প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটিতে কমেছে ০-১৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা। ১৯৭১ সালে মোট জনসংখ্যার ৪১.২ শতাংশ ছিল এই বয়সীরা। আর ২০২৩ সালের মধ্যে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪.২ শতাংশে।

৮০ লাখ নাগরিকের ওপর গবেষণা চালানো হয়। সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দম্পতিরা দুই সন্তান নীতি থেকে বেরিয়ে এখন অন্য পথে হাঁটছেন। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেড়েছে বিয়ে না করার প্রবণতা। যার প্রভাব পড়ছে গড় জন্মহারে।

তবে দ্যা ল্যানসেটের রিপোর্ট বলছে, জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে একজন নারীকে ২.১টি শিশুর জন্ম দিতে হবে। গ্রামীণ ভারতের ক্ষেত্রেও এই সূচকটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। সেখানেও প্রয়োজনের তুলনায় নারীরা কম সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। জনসংখ্যার আচমকা পরিবর্তন দেশটির সমাজ ও অর্থনীতিতে বহুমাত্রিক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন:

অন্যদিকে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সন্তানের দায়িত্ব নিতে ভয় পাচ্ছেন অনেক দম্পতি। চাকরির নিরাপত্তাহীনতা ও সাংসারিক খরচের পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রীর বোঝাপড়ার অভাবও এর একটি কারণ।

৩০ এর শেষ বা ৪০ বছরের পরেও অনেক ভারতীয় নারী বিয়ে করছেন। উচ্চবিত্ত পরিবারেও সন্তানধারণের ইচ্ছা কমছে। কারণ দম্পতিদের স্বাধীন জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা তুলনামূলক বেশি।

আবার প্রজনন হারে ধস নামার পাশাপাশি বয়স্ক মানুষের আধিক্যে ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধ ভারত নিয়েও রয়েছে সংশয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের তিন গুণ গতিতে বাড়ছে ৬০ বা তার বেশি বয়সীদের সংখ্যা। ভারতে বর্তমানে বয়স্কদের সংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি।

২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০.৫ শতাংশ প্রবীণ। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৩৪ কোটিতে। তখন প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন থাকবে ৬০ বা তার বেশি বয়সী।

প্রতিবেদন বলছে, ভারতে মৃত্যুহারও গত পাঁচ দশকে ক্রমশ কমেছে। ১৯৭১ সালে সার্বিক মৃত্যুহার ছিল ১৪.৯ শতাংশ। তা কমে ২০২৩ সালে ৬.৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

এসএস