এশিয়া
বিদেশে এখন
0

রাশিয়া-ইউক্রেন দু’দেশের সাথেই ভারসাম্য রাখছে ভারত

রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দেশটি থেকে একদিকে তুলনামূলক কম দামে জ্বালানি তেল কিনছে ভারত, অন্যদিকে ১ বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনকে গোলাবারুদ সরবরাহ করছে মোদি প্রশাসন। এমনই চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বিষয়ে মস্কো দুইবার সতর্ক করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি নয়াদিল্লি।

ভারতের আমদানিকৃত অস্ত্রের ৬০ শতাংশের যোগানদাতা রাশিয়া। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক মিত্রতাও গভীর। তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হবার পর প্রথম আন্তর্জাতিক সফরে মস্কোকেই বেছে নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এত সুসম্পর্কের পরও ১ বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনকে গোলাবারুদ সরবরাহ করছে ভারত। যুদ্ধে যা ব্যবহার হচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এমনই চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করে হইচই ফেলে দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কাস্টমস বিভাগ, ১১ ভারতীয় ও ইউরোপীয় সরকারের কর্মকর্তা এবং প্রতিরক্ষা ইন্ডাস্ট্রির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন এই তথ্য। মূলত ভারত আর্টিলারি ও মর্টার শেল বিক্রি করছে ইউরোপে। তা বিভিন্ন হাত ঘুরে পৌঁছে যাচ্ছে ইউক্রেনে। এ বিষয়ে গেল জুলাইয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে ভারতীয় কর্মকর্তারদের বৈঠকসহ দুইবার নয়াদিল্লিকে সতর্ক করেছে মস্কো।

ভারতের অস্ত্র রপ্তানি আইন অনুসারে শুধু ক্রেতা পক্ষই বিক্রিত অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। তৃতীয় পক্ষের হাতে অস্ত্র গেলে রপ্তানি বন্ধের অধিকার রাখে ভারত। যদিও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মোদি প্রশাসন।

এদিকে ভারত সরকারের ২ কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট ২ ব্যক্তি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরুর পর কিয়েভের মোট আর্টিলারি শেল আমদানির মাত্র ১ শতাংশ গেছে ভারত থেকে। মোদি সরকার এই শেলগুলো বিক্রি করেছিলো ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, স্পেন ও স্লোভেনিয়ার কাছে। যদিও রয়টার্সের প্রতিবেদনকে অনুমাননির্ভর ও বিভ্রান্তিপূর্ণ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর।

গেল অর্থবছরে ২৫০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি করে দিল্লি। লক্ষ্য ২০২৯ সাল নাগাদ এই অর্থ ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে নেয়া।

বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে মস্কোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কারণে ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি তেল পাচ্ছে ভারত। অন্যদিকে ইউক্রেনকে গোলাবারুদ সরবরাহ করায় খুশি করা যাচ্ছে পশ্চিমাদেরও। ভারসাম্য বজায় রেখে চলার এই নীতির কারণে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও ভারত অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা।