আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও দোষীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে এখনও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি রাজ্য সরকার। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বাড়ছে জনরোষ।
জুনিয়র চিকিৎসকদের মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে আবারও কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু নির্দেশনা অম্যান্য করে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, বিক্ষোভ ততোদিন চলবে যতোদিন না ন্যায়বিচার নিশ্চিত হচ্ছে।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদের মধ্যে একজন জানান, আমাদের সুনির্দিষ্ট যে দাবি আছে সেগুলো মাথায় রেখে আলোচনা হওয়া উচিত। আমাদের অবস্থান বিক্ষোভ যেমন চলছে চলবে। যদি আলোচনা শুরু হতে ৫ মিনিট সময় নেয় তাহলে ৫ মিনিটেই হবে। আর আলোচনা শুরু করতে ২০ দিন নেয় তাহলে ২০ দিনই হতে পারে।
সংকট নিরসনে এতদিন রাজ্য সরকার বারবার আলোচনায় বসতে চাইলেও, তাতে আগ্রহ দেখায়নি জুনিয়র ডাক্তাররা। মঙ্গলবারও মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে রাতভর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। নবান্নে চিকিৎসকদের জন্য অপেক্ষা করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন তারা। তবে, বুধবার সকালে তারা জানান, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের প্রস্তাবে শর্ত সাপেক্ষে আলোচনায় বসতে রাজি তারা। গেলো ৯ আগস্ট ইন্টার্ন চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ৫ দফা দাবিতে আজও চলমান রয়েছে তাদের বিক্ষোভ। এতে যুক্ত হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
আন্দোলনের প্রতি অশ্রদ্ধা। এইযে পৈশাচিক ঘটনা সেটাকে কিছু না বলে চালিয়ে দেওয়ার মানুষিকতা প্রশাসনের মধ্যে বিরাজ করছে বলেও জানান একজন।
এর আগে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভের কারণে মঙ্গলবার জুনিয়র চিকিৎসকদের ইমেইল করেন স্বাস্থ্য সচিব। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, এই ইমেইল তাদের অসম্মান করে করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিবের পদত্যাগও দাবি করেন তারা। দাবি না মানা হলে আরও কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক একজন সঞ্জয় রায়, আরেক জন সন্দীপ ঘোষ। এরমধ্যে আরজি কর কাণ্ড ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ৭ বছর আগে হংকংয়ে থাকা অবস্থায় যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। হংকংয়ের আদালতে একবার বিচারের মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন বলছে, কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগে ভারতের এই চিকিৎসককে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো।