পরিবেশ ও জলবায়ু , এশিয়া
বিদেশে এখন
0

কেরালায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫৮, নিখোঁজ আড়াইশ'র বেশি

পরিবারের নিখোঁজ সদস্যের জন্য উৎকণ্ঠা আর নিহতের শোকে আচ্ছন্ন ভারতের কেরালা রাজ্য। রাজ্যের ওয়ানাড জেলায় জোড়া ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫৮ জনে। এখনও নিখোঁজ আড়াইশ'র বেশি মানুষ। ভারি বৃষ্টিতে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

ভূমিধসের ৫ দিন অতিবাহিত হলেও কেরালায় থেমে নেই মৃত্যু। প্রায় ১৩শ' উদ্ধারকর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমে গেল শনিবার উদ্ধার করা হয়েছে তিন শতাধিক বাসিন্দাকে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও জরুরি সেবায় নিয়োজিতদের সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে নেমেছেন স্থানীয়রাও। গঠন করা হয়েছে স্পেশাল টাস্কফোর্স।

কেরালার উত্তরাঞ্চলে আগামী রোববার পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থাকায় সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, ওয়ানাডসহ আরও ৪টি জেলায় জারি আছে হলুদ সতর্কতা। আলাদা জোনে ভাগ করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে অভিযান চালানো হলেও টানা বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল বিকাশ রানা বলেন, 'আমরা ওয়ানাডকে কয়েকটি আলাদা জোনে ভাগ করেছি। পরিকল্পনা মোতাবেক অভিযান চলছে। আমাদের সাথে একদল পরিবেশবিদ আছেন। তারা ড্রোনের সাহায্যে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে সেনাবাহিনীর 'ডগ স্কোয়াড'। আশা হারাবেন না। বাসিন্দাদের জীবিত উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।'

শুধু কেরালা নয়, ভারি বৃষ্টি ও বন্যার কবলে রাজধানী দিল্লিসহ হিমাচল, উত্তরাখাণ্ড, কর্নাটক, জম্মু-কাশ্মীর। সিকিমেও শুরু হয়েছে নদীভাঙন ও ভূমিধস। প্রাণহানি ঠেকাতে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

এদিকে প্রতিবছরই এই বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে নানা দুর্যোগের কবলে পড়ে সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি খ্যাত এই কেরালা রাজ্যটি। রাজ্য সরকার নানা পরিকল্পনার ঘোষণা দিলেও দুর্যোগের সময় তার প্রভাব চোখ পড়ে না। তবে, কেরালার এই দুর্যোগময় পরিস্থির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।

অধ্যাপক ও পরিবেশবিদ সিপি রাজেন্দ্রন বলেন, 'এই বর্ষা মৌসুমে পৃথিবীর নানা স্থানে বিশেষ করে পূর্ব এশিয়া ও ভারতে ভারি বৃষ্টিপাত দেখা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণেই এমনটা হয়। বিশ্বের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় ঘনঘন দুর্যোগ দেখা যাচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলনের সময় ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া কার্বন নিঃসরণের কারণেও বিপর্যয় বাড়ছে।'

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করতে না পারলে আগামীতে দুর্যোগের ভয়াবহতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। এজন্য সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।