মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাপ্তরিক বাসভবন হোয়াইট হাউস ও দেশটির প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের ছবি তুলেছে উত্তর কোরিয়ার স্পাই স্যাটেলাইট। এই ছবি দেখেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। জাতিসংঘ বলছে, মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর পিয়ংইয়ংয়ের তোড়জোড়ে ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে বিশ্বের সমুদ্র আর আকাশপথের নিরাপত্তা। যদিও ডিপিআরকের দাবি, শুধু উত্তর কোরিয়াই মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
গেলো সপ্তাহেই সফলভাবে প্রথম সামরিক গোয়েন্দা কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের কথা জানায় উত্তর কোরিয়া। বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখে কৃত্রিম উপগ্রহটির নকশা করা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম কেসিএনএ জানায়, কৃত্রিম উপগ্রহটি পিয়ংইয়ংকে অনেক লক্ষ্যবস্তু অঞ্চলের ছবি পাঠাচ্ছে। এসব অঞ্চলের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল আছে। আছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি। আছে পেন্টাগন আর হোয়াইট হাউসের ছবিও।
কেসিএনএ বলছে, অন্যান্য ছবির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুয়ামের অ্যান্ডারসেন বিমানঘাঁটির স্যাটেলাইট ছবি দেখেছেন কিম জং-উন। তিনি নরফোক ও নিউপোর্টের মার্কিন শিপইয়ার্ড, বিমানঘাঁটির স্যাটেলাইট ছবিও পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেখানে মোট চারটি পরমাণু-চালিত বিমানবাহী মার্কিন রণতরী দেখা গেছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের একটি বিমানবাহী রণতরীও ছবিতে দেখা গেছে।
এমন বক্তব্যে পশ্চিমা বিশ্ব, জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, এই স্যাটেলাইট দিয়ে সম্পূর্ণরূপে পুরো বিশ্বের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ বলছে, পৃথিবীতে কোন দেশের নিরাপত্তা এতোটা জটিল না, যতোটা উত্তর কোরিয়ার। এই স্পাই স্যাটেলাইট পাঠানোয় বিশ্বের আকাশপথ আর সমুদ্র, দুই পথেই যান চলাচল ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে। উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম কোন ধ্বংস ডেকে আনার আগেই বন্ধ করার ওপর জোর দেয় সংস্থাটি।
যদিও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে অংশ নিয়ে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাফ জবাব, যতোই যুক্তরাষ্ট্র বলুক, নিরাপত্তা নীতি বহির্ভূত কাজ করছে পিয়ংইয়ং, তাহলে একই কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রও। রাশিয়ারাও একই সুর, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সমঝোতা বজায় রাখার চেষ্টার পরিবর্তে সবসময় অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, পিয়ংইয়ংকে পরমাণু অস্ত্র কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে উল্টো চীন আর রাশিয়ার করনীয় নিয়ে পরামর্শ দিলো যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের দাবি স্পাই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে এটি পরিস্কার যে, নিজেদের পরমাণু অস্ত্র আধুনিকায়ন করছে পিয়ংইয়ং।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করে গেলো ২১ নভেম্বর 'মালিগিয়ং-১' নামের স্পাই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে উত্তর কোরিয়া। এই উৎক্ষেপণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের পরিপন্থী।