বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির। নভেম্বরে তাইওয়ান ইস্যুতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির একটি মন্তব্যকে ঘিরে উত্তপ্ত হয় বেইজিং- টোকিও সম্পর্ক। এর জেরে নিজ দেশেই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তাকাইচি।
এবার সেই বিতর্ক কাটতে না কাটতেই নতুন করে সমালোচনার মুখে তাকাইচি প্রশাসন। সোমবার, জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং তাদের জোট সঙ্গী জাপান ইনোভেশন পার্টি দেশটিতে উৎপাদিত অস্ত্রের রপ্তানি বাড়াতে এ সংক্রান্ত আইনের বাধ্যবাধ্যকতাগুলো শিথিলে একটি নতুন সিদ্ধান্তে সম্মত হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে এই প্রস্তাব জাপানের সংসদে উত্থাপন করা হবে।
আরও পড়ুন:
মূলত তিনটি নীতিমালার আলোকে নিয়ন্ত্রিত হয় জাপানের অস্ত্র রপ্তানি বাণিজ্য। এবার এগুলোতে সংশোধনী আনতে যাচ্ছে তাকাইচি ও তার জোট সঙ্গীরা। আর এতেই চটেছেন জাপানের বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দেশটির সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় অনেকে তাকাইচি প্রশাসনের পদত্যাগও দাবি করেন।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, অস্ত্র রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হওয়া উচিত। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও জাপান ইনোভেশন পার্টির লজ্জা হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে তাকাইচি ও তার মন্ত্রীসভার পদত্যাগ দাবি করছি।
জাপানের কখনও বৈশ্বিক অস্ত্র ব্যবসায়ী হওয়া উচিত নয়। ইতোমধ্যে জাপানে অনেক কোম্পানি অস্ত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আছে। কিন্তু জাপান সরকার এটিকে বন্ধ করার পরিবর্তে, উৎসাহিত করছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এছাড়া, চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মুখে আগামী অর্থবছরের জন্য ৯ ট্রিলিয়ন ইয়েনের রেকর্ড প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন করেছে জাপানের মন্ত্রীসভা। তবে এটি কার্যকরে আগামী মার্চে সংসদ সদস্যদের অনুমোদনের প্রয়োজন।
শুধু প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানো বা অস্ত্রের রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগেই সীমাবদ্ধ থাকে নি তাকাইচি প্রশাসন, সম্প্রতি জাপানের মন্ত্রীসভার ১ সদস্য দেশটির অ-পারমাণবিক নীতি নতুন করে পর্যালোচনার আহ্বান জানান। তবে সরকারের অন্যান্য পদক্ষেপের মতো এটিকেও ভালোভাবে নেয়নি জাপানিজরা।
১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ভয়াবহ পারমাণবিক হামলার শিকার হয় জাপান। একারণে ১৯৬৭ সালে দেশটির সংসদ শান্তির বাণীকে প্রাধান্য দিয়ে তিনটি অ-পারমানবিক নীতি গ্রহণ করে। এর আওতায় দেশটিতে পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন , মজুদ ও প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া, কায়রো ও পটসডাম ঘোষণাপত্র ও ১৯৭২ সালের জাপান চীন যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, জাপানে পারমাণবিক অস্ত্র শিল্পের মতো বিধ্বংসী শিল্পের বিস্তার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে জাপানকে সাম্প্রতিক উচ্চাভিলাষ পরিত্যাগের দাবি চীন ও রাশিয়ার।





