গাজায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনে ঘরবাড়ি হারিয়ে তাঁবুতে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে এখনো উপত্যকাটিতে মানবিক সহায়তা প্রবেশের পূর্ণ প্রবেশাধিকার না পাওয়ায় ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত অসহায় ফিলিস্তিনিরা।
এমন অবস্থায় গাজাবাসীর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদেরকে অন্য দেশে পাঠাতে কাজ করছে কয়েকটি সংগঠন। সম্প্রতি আল-মাজদ ইউরোপ নামে ইসরাইলি মদদপুষ্ট এমন একটি সংগঠনের তথ্য প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা। নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার সত্ত্বে এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তির ভিডিও প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। তিনি জানান, কোন কাগজপত্র ছাড়াই তিনিসহ শুক্রবার অন্তত ১৫৩ জনকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠিয়েছে আল-মাজদ ইউরোপের সদস্যরা।
গাজার বাসিন্দারা বলেন, ‘প্রথমে একটি লিঙ্কের মাধ্যমে আমরা রেজিস্ট্রেশন করি। এরপর সিকিউরিটি স্ক্রিনিং ধাপ শেষ হলে, ব্যাংকের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাঠানো হয়। গাজার অভ্যন্তরে থাকা অন্তত ৩ জন পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন। হোয়াটসঅ্যাপে একটি গোপন নাম্বার থেকে বার্তা আসে এবং এর মাধ্যমে আমাদেরকে স্থানান্তরের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় ও জায়গায় থাকতে বলা হয়। তবে গন্তব্যস্থল ঠিক কোথায় তা জানানো হয় না।’
আরও পড়ুন:
এদিকে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ আফ্রিকায় আসার তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রেসিডেন্টও।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে ফিলিস্তিনি ফ্লাইট দক্ষিণ আফ্রিকায় আসার তথ্য পেয়েছি। তারা কীভাবে এসেছে তা জানার চেষ্টা করছি। তবে আমরা তাদেরকে ফেরত পাঠাবো না।’
স্থানান্তরিত ফিলিস্তিনিদের প্রত্যেককে ১,৫০০ থেকে ৫,০০০ ডলার প্রদান করতে হয়েছে বলে জানায় আল-জাজিরা। এর বিনিময়ে যাত্রার সময় শুধু ফোন আর কিছু ব্যক্তিগত অর্থ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তারা।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গাজা ছাড়তে চাওয়া আরেকজনের সঙ্গে কথা বলে আল-জাজিরা। ওমর নামে ওই ব্যক্তি জানান, আল-মাজদ ইউরোপের এক প্রতিনিধি তাকে গাজা ছাড়ার জন্য নির্দিষ্ট অর্থসহ বেশ কিছু ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে বলেন। পরে তিনি একা ভ্রমণ করতে চাওয়ায় তার অনুরোধ বাতিল করে গ্রুপটি। কেননা শুধু পরিবারসহ যারা গাজা ছাড়তে চায় তাদের জন্যই কাজ করে আল -মাজদ গ্রুপ।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সহায়তায় অনানুষ্ঠানিক চ্যানেল ব্যবহার করে গাজাবাসীকে অন্য দেশে স্থানান্তরে কাজ করছে আল- মাজদ ইউরোপ। ২০২০ সালে জার্মানিতে যাত্রা শুরু হয় গ্রুপটির। এআই ভিত্তিক অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের ওয়েবসাইট সাজিয়েছে গ্রুপটি। একারণে তাদের অফিস ও কার্যক্রম সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না।





