গাজায় শান্তিবাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব পেলে তা গ্রহণ করবে না জর্ডান

ইসরাইলি হামালয় গাজায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ও গাড়ি
ইসরাইলি হামালয় গাজায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ও গাড়ি | ছবি: রয়টার্স
0

গাজায় শান্তি বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব পেলে জর্ডান তা গ্রহণ করবে না বলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ। ফিলিস্তিন সংকটের যৌক্তিক সমাধান খুঁজতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান তিনি। গাজার যেসকল লাইন থেকে ইসরাইল সৈন্য প্রত্যাহার করেছে, সেগুলোতে মৃত জিম্মিদের উদ্ধারে হামাসকে সহায়তায় মিশর ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের প্রতিনিধিদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে তেল আবিব। এদিকে, যেকোনো অজুহাতে ইসরাইল গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ভেস্তে দিতে পারে বলে অভিযোগ হামাস প্রধানের।

যুদ্ধবিরতি শর্তে ইসরাইল রাজি হলেও, এখনো খুলেনি রাফাহ ক্রসিং। এতে গাজা অভিমুখী মানবিক সহায়তা বোঝাই শত শত ট্রাক আটকে আছে মিশরের আল-আরিশ শহরে। এদিকে, শীত আসার আগেই সংকট মোকাবিলায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা সামগ্রী প্রবেশের পরিমাণ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক শরণার্থী সংস্থার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংস্থাটির অভিযোগ, ইসরাইল তাদের কর্মী ও জরুরি ত্রাণসামগ্রীকে গাজায় প্রবেশে জোরপূর্বক বাঁধা দিচ্ছে।

কিন্তু গাজা উপত্যকায় ত্রাণসামগ্রী প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি থাকলেও, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারে সহায়তার জন্য মিশরের প্রতিনিধি দল ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রসকে স্থানীয়দের সঙ্গে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে ইসরাইল। ট্রাম্পের প্রস্তাবে গাজার যে বিশেষ লাইন থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরাইল, সেখানে উদ্ধার অভিযান চালাতে পারবে মিশর ও রেডক্রস । এ লক্ষ্যে গাজায় প্রবেশ করছে ভারি যন্ত্রপাতি।

আরও পড়ুন:

ইসরাইলি সরকারের মুখপাত্র শশ বেদ্রোসিয়ান বলেন, ‘মৃত জিম্মিদের উদ্ধারে যে প্রতিনিধি দলের প্রবেশের অনুমতি মিলেছে তারা কেউই সামরিক সদস্য নয়। উদ্ধার কার্যক্রমে দুই থেকে তিনটি মেশিন ও ট্রাক কাজ করছে। আমরা চাই, হামাস যুদ্ধবিরতির যেসকল শর্তে রাজি হয়েছে সেগুলো পূরণে তাদেরকে সহায়তা করতে।’

এদিকে, আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাতকারে হামাস প্রধান খলিল আল হাইয়া দুই বছরের আগ্রাসনের মুখেও মাথা নত না করায় ফিলিস্তিনি জনগণকে অভিবাদন জানান। পাশাপাশি গাজার মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষ যুদ্ধে শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান হাহিয়া। তার শঙ্কা, ইসরাইল অযৌক্তিক অজুহাত ব্যবহার করে পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে ভেস্তে দিতে পারে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী গাজায় শান্তি বাহিনীর পাঠানোর প্রস্তাব পেলে জর্ডান তা প্রত্যাহার করবে বলে বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে জানান জর্ডানের বাদশাহ। জানান, জর্ডানের অর্ধেকের বেশি জনসংখ্যা ফিলিস্তিনের বংশোদ্ভূত। এ কারণে গাজায় জর্ডান সেনা পাঠালে তা পক্ষপাতমূলক মনে হবে। তবে গাজার স্থানীয় পুলিশের মান উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দিতে ইচ্ছুক বাদশাহ।

জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যদি আমরা ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ব্যর্থ হই এবং আরব, মুসলিম বিশ্ব ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করি, তাহলে আমরা ধ্বংস হয়ে যাব।’

অন্যদিকে, গত দুই বছরে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়েছেন জর্ডানের রানী রানিয়া। তবে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হওয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান রাণী।

ইএ