টানা কয়েকদিনের সহিংস বিক্ষোভ আর পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের পর থমথমে পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভো।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ২৪ ঘণ্টার জন্য রাজধানীতে বিক্ষোভ স্থগিতের ঘোষণা দেয় বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের সুস্থতা নিয়ে উদ্বেগের জেরে আন্তানানারিভোবে মিছিল স্থগিত হলেও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দাবিতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অব্যাহত রয়েছে মাদাগাস্কারে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘আমি মনে করি দেশকে আমূল পরিবর্তনের পথ এই আন্দোলনেই লুকিয়ে আছে। আমাদের সবকিছু পুনর্বিন্যাস করতে হবে। কারণ এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার একচেটিয়া অধিকারকে এমন একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিয়েছে, যারা কেবল তাদের নিজেদের স্বার্থের কথাই চিন্তা করে।’
আরও পড়ুন:
নেপাল-কেনিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তরুণদের নেতৃত্বে জেন-জি বিক্ষোভের রেশ ছুঁয়েছে, ভারত মহাসাগরীয় সর্ববৃহৎ দ্বীপদেশটিকেও। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ২২ জনের, আহত শতাধিক। এ তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছে মাদাগাস্কার সরকার। যদিও এরই মধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়রি সে'কে। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নের জেরে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় সরকার ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়লিনা বলেন, ‘হয়তো আপনাদের ইচ্ছার প্রতিফলন আমরা ঘটাতে পারিনি। আপনাদের শঙ্কা, দুর্দশার কথা শুনতেও ব্যর্থ হয়েছি। তাই সংবিধানের ৫৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আমি প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার এবং সরকার ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার আগ পর্যন্ত বর্তমান সরকারের একটি অংশ অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পালন করবে।’
দেশজুড়ে পানি আর বিদ্যুৎ সংকটকে ঘিরে গেলো সপ্তাহ থেকে বিক্ষোভে উত্তাল মাদাগাস্কার। ২০২৩ সালে পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়লিনার জন্যেও চলমান পরিস্থিতিকে দেখা হচ্ছে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে। ২০০৯ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন তিনি।
পরে ২০১৪ সালে পদত্যাগ করলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জিতে ফের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সবশেষ দু'বছর আগের নির্বাচনে জিতে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল সেবারের ভোটে।





