বুধবার গভীর রাত থেকে এভাবেই গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহরে থাকা একের পর এক জাহাজ আটক করতে শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। গাজা উপত্যকা অভিমুখী ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করা মানবাধিকার কর্মীদের দিকে উঁচিয়ে ধরা হয় বন্দুকের নল।
এরইমধ্যে সবগুলো জাহাজসহ দুঃসাহসী অভিযাত্রীদের আটক করে নিজেদের কব্জায় নেয়ার দাবি করছে ইসরাইল। ক্ষুধার যন্ত্রণায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া গাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিদের কাছে কিছুতেই ত্রাণ পৌঁছাতে দিতে চাইছে না নেতানিয়াহুর সেনারা। মানবিক এই অগ্রযাত্রায় সর্বপ্রথম ইসরাইলের আক্রমণাত্মক আচরণের শিকার হয়েছে বহরটিতে নেতৃত্ব দেয়া সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের নৌযান আলমা।
সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী অপহরণ করে আমাকে নিয়ে এসেছে। আমাদের মানবিক লক্ষ্য ছিল অহিংস। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন মেনে যাত্রা করছিলাম। দয়া করে আমার সরকারকে বলুন যেন তারা আমার এবং অন্যদের অবিলম্বে মুক্ত করে।’
আরও পড়ুন:
অবরোধ ভেঙে গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরটি ইসরাইলের আশদোদ বন্দরে নোঙর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তেলআবিব। এমনকি নৌবহরে থাকা সব মানবাধিকার কর্মী নিরাপদ এবং সুস্থ আছেন বলেও দাবি করছে ইসরাইল। ফ্লোটিলার আটক মানবাধিকার কর্মীদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এমন পরিস্থিতিতেও গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সমালোচনা করে বসলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, মানবাধিকারকর্মীদের এই মিশন কিংবা ইতালিতে এর সমর্থনে ডাকা ধর্মঘট—কোনোটিই ফিলিস্তিনিদের উপকারে আসবে না।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, ‘এখনও আমি বিশ্বাস করি যে এ ধরনের কোনো প্রচেষ্টা কার্যত ফিলিস্তিনি জনগণের উপকারে আসবে না। বরং আমার মনে হচ্ছে, এ ধরনের কাজে যুক্ত হওয়ায় ইতালীয় জনগণের জন্য অনেক অসুবিধার কারণ হবে।’
এদিকে ইসরাইলের এই কর্মকাণ্ডের জেরে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা বিশ্বের মানুষ। নিন্দা জানিয়েছে মালয়েশিয়া, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া ও তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, ‘আমি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার বিরুদ্ধে দস্যুতার নিন্দা জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভ্রমণকারী বেসামরিক নাগরিকদের উপর ইসরাইলের এই আক্রমণ আবারও প্রমাণ করেছে যে, গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ লুকানোর জন্য গণহত্যাকারী ক্যাডাররা কতটা উন্মাদ হয়ে উঠেছে। গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার তো দূরের কথা, শান্তির সম্ভাবনা সূচনারও কোনো আচরণ করছে না নেতানিয়াহু সরকার।’
বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশের প্রায় ৫ শ’ মানবিক মানুষ গাজায় খাবার, ত্রাণ ও ওষুধ পৌঁছে দিতে ৪৪টি নৌযান নিয়ে গেল আগস্টের শেষে স্পেন থেকে যাত্রা শুরু করে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা।





