জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন জেলেনস্কি, চাইবেন যুদ্ধবিরতির সমর্থন

ভলোদিমির জেলেনস্কি
ভলোদিমির জেলেনস্কি | ছবি: সংগৃহীত
0

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বনেতাদের সমর্থন আদায়ে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও আলোচনার কথা রয়েছে তার। যদিও, মস্কোর পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি সম্প্রসারণের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এদিকে, ন্যাটোর আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে এরইমধ্যে নিউইয়র্কে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন শান্তি প্রচেষ্টায় সমর্থন আদায়ে বিশ্বনেতাদের নজর কাড়ার চেষ্টা করবেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে এক্স বার্তা তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধে সব চেষ্টা করে যাচ্ছে ইউক্রেন। অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও আলোচনা করবেন তিনি। দুই ডজন বৈঠকে অংশ নেবেন জেলেনস্কি। বুধবার ভাষণ দেবেন জাতিসংঘ অধিবেশনে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার ওপর কঠোর নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ট্রাম্পের মন গলাতে পারবেন না জেলেনস্কি। এছাড়া, জেলেনস্কির উদ্যোগের প্রতি ধীরে ধীরে সমর্থন কমছে ইউক্রেনীয়দের। তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তায়। ইউক্রেনকে দুর্বল করতে তাদের ড্রোন সংরক্ষণাগার ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষর হওয়া পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াতে ট্রাম্পকে প্রস্তাব দেন পুতিন। পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত রাখতে ২০১০ সালে একটি চুক্তি দুই দেশ। যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে মস্কোর প্রস্তাবটি বেশ ভালো। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন ট্রাম্প।

আরও পড়ুন:

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন ল্যাভিট বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি পুতিনের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবগত আছেন। এ বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন। পরমাণু অস্ত্র চুক্তি সম্প্রসারণের বিষয়ে ট্রাম্প চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।’

এদিকে, এস্তোনিয়া, পোল্যান্ডসহ ন্যাটোভুক্ত দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনায় জরুরি বৈঠক করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। রাশিয়ার এমন পদক্ষেপ ইউরোপকে ঝুঁকিতে ফেলছে বলে মন্তব্য করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর আকাশসীমায় রুশ বিমানের উপস্থিতির ছবি তুলে ধরেন এস্তোনিয়ার প্রতিনিধি। উত্তেজনা কমাতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। তবে ইউরোপীয়দের এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া।

জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, ‘ইউরোপীয় অংশীদাররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে যাচ্ছে। এ অযৌক্তিকতার আয়োজনে রাশিয়া অংশগ্রহণ করবে না। ইউরোপীয় অঞ্চলসহ এ অঞ্চলের নিরাপত্তা যেকোনো ধরনের আলোচনায় প্রস্তুত মস্কো।’

তবে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা ক্যালাস বলেন, ‘রুশ বিমান আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে প্রতিটি দেশেরই আত্মরক্ষার এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার রয়েছে।’

ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা ক্যালাস বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে রাশিয়া পরীক্ষা করছে। দেখি তারা কতদূর যেতে পারে। রাশিয়া ইউরোপের মধ্যে একটি ভয়ের বীজ বপন করছে। যেটা হলো ইউক্রেনকে সমর্থন করলে যুদ্ধ অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়বে এবং এটি প্রসারিত হবে।’

এদিকে, ইউক্রেনের একের পর এক অঞ্চল দখল করে অগ্রসর হচ্ছে রাশিয়া। সোমবার দনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলের আরও একটি বসতি দখলে দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রাতভর রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে হতাহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হোটেল, প্রশাসনিক ভবন ও বেসামরিক অবকাঠামো।

ইএ