আবারও ইসরাইলি আগ্রাসনে ২০ ফিলিস্তিনি নিহত, ১৬ ভবন ধ্বংস

গাজায় হামলা
গাজায় হামলা | ছবি: সংগৃহীত
0

সোমবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত আগ্রাসন চালিয়ে গাজা উপত্যকার প্রায় ২০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এর আগে রোববার একদিনে অন্তত ৫৩ জনকে হত্যা ছাড়াও; শুধু গাজা সিটিরই ১৬টি ভবন ধ্বংস করেছে নেতানিয়াহুর সেনারা। এছাড়া বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যেতে বাধ্যতো করা হচ্ছেই, হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যন্ত গাজা সিটি থেকে সরিয়ে নিতে চাপ দিয়া হচ্ছে।

প্রায় দুই বছর ধরে গাজা উপত্যকায় এভাবেই হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী। দুর্ভিক্ষের নগরী গাজা সিটিকে পুরো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে প্রতিদিন বিমান ফেলে গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বহুতল ভবনগুলো। রোববার একদিনে ধ্বংস করা হয়েছে ১৬ ভবন। এতে হতাহতের শিকার হচ্ছেন অসংখ্য নিরীহ ফিলিস্তিনি।

এভাবেই গণহত্যা চালিয়ে বাসিন্দাদের গাজা সিটি ছেড়ে চলে যাওয়ার বাধ্য করছে নেতানিয়াহুর সেনারা। কিন্তু গাজাবাসী জানেননা কোন অঞ্চলটি তাদের জন্য নিরাপদ। কারণ মানবিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা দিয়েও দক্ষিণের শহর মাওয়াসিতে পর্যন্ত আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। তাই জীবন রক্ষায় ঠিক কোথায় গিয়ে উঠবেন তা জানা নেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির বাসিন্দাদের।

বাসিন্দারা বলেন, ‘আমরা দক্ষিণে গিয়েছিলাম এবং সেখান থেকে ফিরে এসেছি, কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়। আমার সৃষ্টিকর্তায় করুণায় এখনও বেঁচে আছি। আমরা জানি না কোথায় যেতে হবে। আমাদের এই পরিস্থিতির খুব দ্রুত সমাধান দরকার। আমরা চাই আরব দেশগুলো আমাদের সাহায্য করুক। এই আগ্রাসন বন্ধে তাদের বাধ্য করুক। আমরা দুই বছর ধরে কষ্ট পাচ্ছি।’

হাজার হাজার রোগীর সঙ্গে চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যন্ত গাজার দক্ষিণে স্থানান্তরের জন্য হাসপাতালগুলোকে চাপ দিচ্ছে ইসরাইল। এ হুমকির মুখোমুখি সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা। চিকিৎসা সরঞ্জামের চরম সংকটের মধ্যে নেতানিয়াহু প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে আরও বেশি বিপর্যয়ের কবলে গাজাবাসী।

আরও পড়ুন:

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘আল-শিফা হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৪৫ থেকে ৫৫টি অস্ত্রোপচার করা হয়। যা অন্য এলাকায় করা প্রায় অসম্ভব। আমরা সবাই নিরস্ত্র বেসামরিক। গাজার দক্ষিণে আমরা কোথায় যেতে পারি? সেখানে আমাদের চিকিৎসা করার মতো কোনও হাসপাতাল নেই। এমনকি উপত্যকার সবখানেই চিকিৎসা পরিষেবার চরম সংকট।’

এদিকে মাথা বা বুকে গুলিবিদ্ধ ১শ’র বেশি শিশুর চিকিৎসা করেছেন এমন স্বেচ্ছাসেবক বিদেশি চিকিৎসকরা অভিযোগ করেছেন, পরিকল্পিতভাবে গাজার শিশুদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৮শ’র বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এছাড়া সীমান্ত বন্ধ রাখায় তীব্র খাদ্য সংকটে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৪২০জন ছাড়িয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে দেশে দেশে গাজাবাসীর সমর্থনে বিক্ষোভ করছে হাজার হাজার মানুষ। রোববার স্পেনের মাদ্রিদে গাজাবাসীর সমর্থন ও ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভে বাধা দিলে পুলিশের সাথে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শহরটিতে আয়োজিত ২১ দিনের ’লা ভুয়েল্টা আ এস্পানা' নামক সাইক্লিং রেস পরিত্যক্ত হয়ে যায়।

ইএ