‘রেড মুন’-এর সৌন্দর্য উপভোগ করলো বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ

পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বা রেড মুন | ছবি: সংগৃহীত
0

বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ গতকাল (রোববার) রাতে উপভোগ করেছেন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বা রেড মুন। মহাজাগতিক এ বিরল দৃশ্য খালি চোখে উপভোগ করতে অনেকে ভাগ্যবান মনে করছেন নিজেকে। অনেকে আবার মুঠোফোনে বন্দি করতে ব্যস্ত লাল চাঁদকে। জ্যোতির্বিদরা বলছেন, আগামী দুই বছরের আগে দেখা যাবে না চাঁদের এ রূপ।

মিশরের পিরামিড, সিডনির হারবার ব্রিজ, দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফা কিংবা সুইজারল্যান্ডের নৈসর্গিক সৌন্দর্য সব কিছুই যেন হার মেনেছে রোববারের আকাশে চাঁদের মায়ার কাছে।

জেরুজালেম:

সেই মায়ায় পড়েই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বা রেড মুন দেখতে উন্মুখ ছিলো বিশ্ববাসী। বিরল এ দৃশ্য উপভোগে অনেকে পরিবার নিয়ে বাড়ির ছাদে, আবার অনেকে আয়োজন করে বন্ধুবান্ধব নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বের হয়েছেন।

জেরুজালেমের এক বাসিন্দা বলেন, ‘বন্ধুর সঙ্গে চন্দ্রগহণ দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে। আর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি চাঁদের অপরূপ সৌন্দর্য দেখার জন্য।’

বেইজিং:

চাঁদ দেখার পাশাপাশি অপরূপ সুন্দর এ দৃশ্য মুঠোফোন বা ক্যামেরায় বন্দি করতে ব্যস্ত ছিলেন অনেকে।

দর্শনার্থীরা বলেন, ‘রেড মুনের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। তাই এখানে আসা। এখানে অনেকেই ক্যামেরা নিয়ে এসেছেন। অনেকে আবার মোবাইল দিয়েই চাঁদের ছবি তুলছেন। আমি খুব একটা ভালো ছবি তুলতে পারি না। তবুও চেষ্টা করছি সুন্দর একটা ছবি তোলার।’

আরও পড়ুন:

তেহরান:

খালি চোখে মহাজাগতিক এ দৃশ্য দেখতে পেয়ে অনেকে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। কারণ আগামী দুই বছরের আগে চন্দ্রগ্রহণের দেখা মিলবে না বলে জানান জ্যোতির্বিদরা।

জ্যোতির্বিদরা জানান, জ্যোতির্বিদ্যা ও জ্যোতির্বিদ সাধারণ মানুষের কাছে বরাবরই আগ্রহের বিষয়। তাছাড়া খোলা আকাশে চাঁদের এমন সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাওয়া অনেক ভাগ্যের বিষয়।

জর্ডান:

জর্ডানের জ্যোতির্বিদ ড. আম্মার সাকাজি বলেন, ‘পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের মতো জ্যোতির্বিদ্যার অদ্ভুত সুন্দর এক ঘটনার সাক্ষী হলো বিশ্ববাসী। ২০২৮ সালের আগে জর্ডানের মানুষজন এ দৃশ্য আর দেখতে পাবে না। পৃথিবীর ছায়ায় অর্ধেক চাঁদ ঢেকে গেছে। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখার অপেক্ষা।’

আফ্রিকা:

আকাশ পরিষ্কার থাকায় এশিয়া, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকা থেকে খালি চোখে দেখা যায় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। বিশ্বের প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ উপভোগ করেছেন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বা রেড মুন।

চন্দ্রগ্রহণে সূর্য থেকে চাঁদে কোন আলো পৌঁছাতে পারে না। চাঁদ ও সূর্যের মাঝামাঝি পৃথিবী চলে আসে। তাই চাঁদের রং পরিবর্তন হয়ে লাল দেখায়। সবাই রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। হয়তো এতো মানুষ দেখে আকাশের তারারাও আজ আশ্চর্য হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টা ২৮ মিনিটে শুরু হয় এ চন্দ্রগ্রহণ। যা সোমবার ভোর ২ টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই সময়ে পৃথিবী, চাঁদ আর সূর্য একই কক্ষপথে চলে আসে। চাঁদ ও সূর্যের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে পৃথিবী। আর পৃথিবীর ছায়া পড়ে চাঁদের ওপর। সেই ছায়ায় লালচে বর্ণ ধারণ করে চাঁদ। আর একেই বলা হয় 'রেড মুন' বা 'ব্লাড মুন। প্রায় ৮২ মিনিট স্থায়ী হয় চাঁদের এই রূপ।

ইএ