প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সতর্কবার্তা, যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে আর আগের মতো পাশে পাচ্ছে না ইউক্রেন। তার অভিযোগ, কূটনৈতিক আলোচনায় ইউক্রেনকে অনেকটা উপেক্ষা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন সমর্থন ছাড়া ইউক্রেনের টিকে থাকা কঠিন। গোটা ইউরোপকে মার্কিন সহায়তা ছাড়াই চলতে হবে বলেও আশঙ্কা তার।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো ধরনের চুক্তি মেনে নেয়া হবে না। কৌশলে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে রেখে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছেন পুতিন। তার মতে, গুটি কয়েক নেতার কথায় যুদ্ধ বন্ধ হবে না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘এই মুহূর্তে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়া পিছিয়ে আছে। এই যুদ্ধ ভুল পথে গেলে, ইউক্রেনে হত্যা ও লুটপাটের ঘটনা বাড়বে। যুদ্ধের সিদ্ধান্ত কেবল কয়েকজন নেতা নিতে পারবেন না। ট্রাম্প ও পুতিন বা আমি ও পুতিন নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একসঙ্গে সিদ্ধান্তে আসতে হবে।’
এমন অবস্থায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ইউরোপকে সশস্ত্রবাহিনী গঠনের আহ্বান জানান জেলেনস্কি। কারণ এই মুহূর্তে ইউক্রেনের প্রচুর সেনা প্রয়োজন। ইউক্রেনের শান্তি প্রতিষ্ঠায় গোটা ইউরোপকে পাশে চান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। যদিও ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেয়ার বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত।
এদিকে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটো বলেন, জোটে ইউরোপের আরও বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। কারণ প্রতিরক্ষা খাতে তাদের অবদান যথেষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দেয়া যায় না।
ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটো বলেন, ‘ন্যাটোর প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পূর্ণ প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তবে এটি প্রত্যাশিত যে, ইউরোপীয় দেশগুলোও এগিয়ে আসতে হবে। তাদের আরও বেশি ব্যয় করতে হবে। কারণ ইউরোপ ন্যাটোর প্রতিরক্ষা খাতের জন্য যথেষ্ট ব্যয় করছে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগের সত্যতা আছে।’
এদিকে, ইউরোপিয়ানদের বাকস্বাধীনতা নিয়ে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন জার্মানিসহ ইউরোপীয় নেতারা। এর কয়েক ঘণ্টা পরই ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাদের বাকস্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ইউরোপীয়ানদের বাকস্বাধীনতা হারানো নিয়ে ভ্যান্সের বক্তব্য শুনেছি। এটা সত্যি, ইউরোপে বাকস্বাধীনতা হারাচ্ছে। তাদের এই অসাধারণ অধিকার এরই মধ্যে নাই হয়ে গেছে। ভ্যান্স একবিন্দুও ভুল বলেননি। ইউরোপকে সাবধান থাকতে হবে। আর অবৈধ অভিবাসীর কারণে ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা হচ্ছে।’
শান্তি আলোচনা শুরুর আগেই তীব্র হচ্ছে রাশিয়ার আক্রমণ। খেরসনের পর দোনেৎস্ক অঞ্চলের আরও ছয়টি বসতি দখলে নিয়েছে মস্কো। এদিকে, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের বাইরে ন্যাটোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে বহু মানুষ। তাদের বক্তব্য, অস্ত্র বিক্রি বন্ধ না করে এসব আলোচনায় কখনো শান্তি আসবে না।