বিদেশে এখন
0

কুরস্কে হামলার জবাবে চেরনিহিভে রুশ অভিযান, গ্যাস সংকটে মলদোভা

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনী ব্যাপক হামলা চালানোর পর কিয়েভের উত্তরে থাকা আবাসিক এলাকা চেরনিহিভে হামলা তৎপড়তা বাড়িয়েছে মস্কো। নতুন বছরের প্রথম তিনদিনে ইউক্রেনের লক্ষ্যবস্তুতে রাশিয়া ৩শ'টি ড্রোন এবং প্রায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। এদিকে ইউক্রেন হয়ে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় বিপাকে মলদোভার বাসিন্দারা। গ্যাস ট্রানজিট ফি বাবদ বছরে প্রায় ৮০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন ইউক্রেন।

পাল্টাপাল্টি হামলায় কাঁপছে ইউক্রেন ও রুশ ভূখণ্ড। কুরস্ক অঞ্চলে থাকা রুশ ঘাটিতে ভায়বহ হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এতে একটি ভবন ও বেশ কয়েকটি যানবাহন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ছে। তবে চারটি ইউক্রেনীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ভূপাতিত করার দাবি রাশিয়ার।

এরপরই কিয়েভের উত্তরে থাকা আবাসিক এলাকা চেরনিহিভে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মস্কো। যুদ্ধের একহাজার ৪৫তম দিন শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনীয় শহরটিতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। এছাড়াও দক্ষিণ জাপোরিঝিয়া এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলের ফ্রন্টলাইনের কাছে স্লোভিয়ানস্ক শহরেও প্রাণঘাতি হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।

নতুন বছরের প্রথম তিনদিনে রাশিয়া অন্তত ৩শ'টি ড্রোন এবং প্রায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার বেশিরভাগই প্রতিহতের দাবি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা বুঝে নেয়ার পর পুতিনকে থামাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন বলে প্রত্যাশা জেলেনস্কির।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া যেকোনো নিরাপত্তা গ্যারান্টি ইউক্রেনের জন্য দুর্বল নিরাপত্তা গ্যারান্টি হবে। আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। এটা অন্যথায় হতে পারে না।’

এরইমধ্যে ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তা ঘোষণার আশ্বাস দিয়েছে হোয়াইট হাউস। ইতোমধ্যে গত সপ্তাহেই কিয়েভের জন্য প্রায় ৬শ' কোটি ডলারের অতিরিক্ত সামরিক ও বাজেট সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে ব্ল্যাকআউটের কবলে স্বঘোষিত রাজ্য মলদোভা। এতে শীতের মধ্যে চরম দুর্ভোগের শিকার ইউক্রেন সীমান্তবর্তী বিচ্ছিন্ন অঞ্চলটি বাসিন্দারা।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘আমি জানি না কি ঘটতে যাচ্ছে। আমরা এটা কাটিয়ে উঠতে পারবো কিনা। সৃষ্টিকর্তা আমাদের যুদ্ধ থেকে রক্ষা করুন।’

আরেকজন বলেন, ‘আমরা জানি না, কবে জ্বালানি ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে। শীত নিবারণে আপাতত আমাদের কাছে কম্বল, গরম মোজা এবং অন্যান্য কাপড় আছে।’

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে সোভিয়েত যুগের পাইপলাইনগুলোর মাধ্যমে ইউরোপে রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি বুধবার থেকে বন্ধ। যুদ্ধের কারণে নতুন করে গ্যাস সরবরাহ চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় মস্কো ও কিয়েভ।

গ্যাস রপ্তানি বন্ধে রাশিয়ার কাছ থেকে ট্রানজিট ফি বাবদ বছরে প্রায় ৮০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন ইউক্রেন। এছাড়া গ্যাস বিক্রি থেকে প্রায় ৫শ' কোটি ডলার আয় হারাবে গ্যাজপ্রম।

ইএ