সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। এর প্রভাব এখন বহুমুখী। নেচার সাসটেইনেবিলিটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, উষ্ণায়ন ও স্থলভাগে পানির সংকটে বিশ্বজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়বে দশগুণ। যার প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতেও। ব্যাহত হবে খাদ্য উৎপাদন।
প্রচণ্ড গরমে নিয়মিত গলছে বরফ। আকস্মিক বন্যার কবলে পড়ছে উপকূলের বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, হিমবাহগুলো দ্রুত গলে যাওয়ায় ঝুঁকিতে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তনে তাপমাত্রা বেড়ে পার্বত্যাঞ্চলে ঘন ঘন দেখা দিচ্ছে আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস, পাহাড় ধসের ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অবকাঠামো, বাড়িঘর ও কৃষি জমি।
পাহাড়ের ভূপ্রকৃতির চিত্রও বদলে যাচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেইন ডেভেলপমেন্ট বলছে, কার্বন নির্গমন না কমলে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ হিমবাহগুলোর দুই-তৃতীয়াংশই গলে যেতে পারে। যে কারণে জলবায়ুর সামান্য পরিবর্তনকেও গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল কো ব্যারেট বলেন 'জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিদ্যমান পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি। পরিবর্তনের প্রতিটি অংশ গুরুত্বপূর্ণ। তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রতিটি ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ। হিমবাহ ও বরফ গলে যাওয়ায়, বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। প্রতি বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধি আমাদের বাস্তুতন্ত্রের ও অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।'
ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের সবুজ। জলবায়ু পরিবর্তনে পার্বত্য অঞ্চল এখন রূপ নিচ্ছে বিরান ভূমিতে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে পাহাড়ের বাসিন্দারা।
বিশ্বে যেসব দেশের গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ এক শতাংশেরও কম, তারাই জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক বিষয়। বিপর্যয়ের ভয়াবহতা কমানোর চেষ্টা করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।