গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এখন যেন লেবাননের একই পরিস্থিতি হয়, নেতানিয়াহুর নির্দেশে সেই চেষ্টাই যেন করে যাচ্ছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে আবারও বিমান হামলা করে আবাসিক ভবন গুড়িয়ে দিয়েছে আইডিএফ। পূর্বাঞ্চলের বালবেক শহরে ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। দেশটিতে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। বন্দর শহর তাইরে আর বাক্কা ভ্যালিতে রাতভর চলেছে বিমান হামলা।
গাজায় রাতভর হামলা চালিয়েছে আইডিএফ। উপত্যকার নুসেইরাত ক্যাম্প, নাবলুসসহ শরণার্থী শিবিরগুলো কোনোভাবেই বাদ যাচ্ছে না হামলা থেকে। লেবানন সীমান্তে সিরিয়ার কুসাইর অঞ্চলেও বিমান হামলায় প্রাণ গেছে কয়েক সিরিয়ান নাগরিকের। ইসরাইলের দাবি, হিজবুল্লাহ'র অস্ত্রের গুদামে হামলা চালিয়েছে তারা। বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে এতো আহ্বান জানানো হলেও যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করে গাজার বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু।
মার্কিন কর্মকর্তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন, কোনোভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যেন কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি। ব্লিঙ্কেন প্রস্তাব নিয়ে গেলেও কূটনৈতিক কোন সমাধানে আসছে না ইসরাইল, হিজবুল্লাহ কিংবা হামাস। যুক্তরাষ্ট্র আতঙ্কে আছে ইরানের ইসরাইলে হামলা নিয়েও।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘লেবানন আর গাজা ইস্যুতে কাজ করছি। লেবানন আর ইসরাইলকে কূটনৈতিক সমাধানে আসতে হবে। সীমান্ত থেকে হিজবুল্লাহকে সরে যেতে হবে। যুদ্ধবিরতি কার্যকরে আমরা কাজ করছি।’
এদিকে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, ইরান থেকে হামলার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, তেহরান এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। সামরিক খাতে হামলায় ইরান দ্বিধায় পড়ে গেছে ইসরাইলে হামলা করবে কিনা। এর আগে সংবাদ মাধ্যম সিএনএন জানিয়েছিলো, ইসরাইলে ভয়াবহ হামলা চালাবে ইরান। নেতানিয়াহু এক বক্তব্যে আবারও হুমকি দিয়েছেন ইরানকে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আজকে পর্যন্ত ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ইসরাইলের যথেষ্ট স্বাধীনতা আছে। ইরানের যেকোনো স্থানে যেতে পারবো যদি প্রয়োজন পড়ে। দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য সুপ্রিম লক্ষ্য ঠিক করা আছে। ইরান কোন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে না।’
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, গাজা আর লেবাননে সামরিক অভিযানের লক্ষ্য প্রায় শেষ। চাইলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে অভিযান স্থগিত করতে পারে তেল আবিব। আইডিএফ জানায়, উত্তরাঞ্চলে অভিযান শেষের সময় হয়েছে। এমন কেউ সেখানে অবশিষ্ট নেই, যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সম্ভব। কিন্তু ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাবে কতটুকু সম্মত হবেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়, কারণ গাজা থেকে তার প্রয়োজন শুধু বিজয়।
এদিকে, ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স দাবি করেছে, ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চল আর গোলান মালভূমিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে তারা। তবে লেবাননের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশাবাদী বৈরুত। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যেই কার্যকর হতে পারে যুদ্ধবিরতি।