কলকাতার আরজি কর কাণ্ডে বেশ ক'দিন ধরেই বেশ থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে পশ্চিমবঙ্গে। দাবি ওঠে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে পদত্যাগের। এরই জেরে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় শিক্ষার্থী ও নাগরিক ছাত্র সমাজ। তাদের আন্দোলন দমাতে জলকামান, লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পুলিশ। শান্তিপূর্ণ অভিযান রূপ নেয় সহিংসতায়। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বুধবার রাজ্যজুড়ে ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের ডাক দেয় বিজেপি।
স্থানীয় সময় বুধবার ( ২৮ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মসূচির পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক শোডাউন চালায় বিজেপি-তৃণমূল।
এদিন উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায় বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলিতে আহত হন বেশ কয়েকজন। বিজেপির অভিযোগ তাদের দুই নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় তৃণমূল সমর্থকরা। পুলিশের নিরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতারা।
বাংলা বনধ আন্দোলন সফল করতে সফল করতে বিভিন্ন সড়ক, রেলপথ ও মেট্রো স্টেশন দখলে নেয় বিজেপি কর্মীরা। কৃষ্ণনগর, শিয়ালদাহ, হুগলি, মুর্শিদাবাদসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় রেলপথ অবরোধ করে আটকে দেয়া হয় যাত্রীবাহী ট্রেন। কোচবিহারে বাসে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন তারা। বিভিন্ন জেলার মধ্যে বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে, বিজেপির আন্দোলন প্রতিহত করতে মাঠে রয়েছেন তৃণমূল সমর্থক ও নেতাকর্মীরাও। রাজ্যের বিভিন্ন শহরে বিশাল মিছিল বের করে তারা। মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের দোকানপাট খুলে রাখার আহ্বান জানায় তৃণমূল। এসময় পুলিশের উপস্থিতিতেই মালদাহ, আসানসোল, রানাঘাটসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পুলিশ। এ সময় কোচবিহার, মেদিনীপুরসহ কয়েকটি জেলা থেকে প্রায় আড়াই শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। এদিকে, রাজ্যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় নবান্ন অভিযানের অন্যতম সমন্বয়ক সায়ন লাহিড়িকে।
সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার রাস্তায় যান চলাচল কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না কেউই। বন্ধ আছে বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গণপরিবহনের সংকট থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা।