রাতের আকাশে দেখা মিললো সুপার মুনের

0

চাঁদের সৌন্দর্যের বিরল দৃশ্য দেখলো বিশ্ববাসী। গেল রাতের আকাশে দেখা মিললো সুপার মুনের। বছরের প্রথম সুপার ব্লু মুনের অনাবিল সৌন্দর্য খালি চোখে উপভোগ করেন এশিয়া, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার কোটি মানুষ। চলতি বছর ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৭ অক্টোবর ও ১৫ নভেম্বর দেখা মিলবে আরও তিনটি সুপার মুনের।

মধু জোছনায়, রাত্রির সাথে চাঁদের মিলন। ভালোবাসা বুঝি এমনই। তাইতো গানের সুরে মান্না দে বলেছিলেন ও চাঁদ সামলে রেখো জোছনাকে। পৃথিবীর থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব প্রায় ৩ লাখ ৮৪,৪০০ কিলোমিটার । শতবাধা সত্বেত্ত সোমবার রাতে চাঁদকে খুব কাছ থেকে আপন করে নেন বিশ্ববাসী।

সোমবার রাতে এশিয়ার পাকিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরাক, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়ার আকাশে দেখা দেয় বিরল সুপার মুন। উজ্জল চাঁদকে দেখতে রাস্তাসহ বিভিন্ন উদ্যান ও বাড়ির ছাদে ভিড় জমান বাসিন্দারা। অনেকে এসেছিলেন প্রিয়জনকে নিয়ে, কেউ আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে উপভোগ করেন চাঁদের বিমোহিত সৌন্দর্য। পাশাপাশি সমুদ্রের তীরে বসে নোনা জলে গা ভাসিয়ে অনেকেই ডুবে যান চাঁদের আলোয়। অনেকে আবার চাঁদকে বন্দি করে রাখেন মুঠোফোনে।

দর্শনার্থীদের একজন বলেন, ‘চাঁদটি অনেক গোলাকার। মনে হচ্ছিলো হাত বাড়িয়ে, এটিকে স্পর্শ করি। এত বড় উজ্জ্বল চাঁদ আমি আর আগে আর কখনো দেখিনি।’

আরেকজন বলেন, ‘আমি খুবই ভাগ্যবান। এই ধরনের চাঁদ খুব কমই দেখা যায়, বিশেষ করে আমরা যেহেতু সমতলে বাস করি, আমরা পাহাড়ে উপরে উঠে এমন চাঁদ দেখতে পাই না।’

শুধু এশিয়া মহাদেশেই নয়, সুপার মুনের সৌন্দর্য্য নজর কেড়েছে লাতিন আমেরিকা ও ইউরোপ মহাদেশের বাসিন্দাদেরও। চাঁদ দেখতে ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারে জড়ো হন শত মানুষ। জার্মানির ডর্টমুন্ডে দৃশ্যমান হয় লাল উজ্জল আবহের চাঁদ। গ্রিসের এজিয়ান সাগর তীরে বসেও চাঁদের সৌন্দর্য উপভোগ করেন অনেকেই। সুপারমুনের আভা ছড়িয়ে পড়ে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো, ভেনেজুয়েলার কারাকাস ও পশ্চিম বলিভিয়ারা এল অল্টো শহরে। বোটাফোগো সৈকতে খেলাধুলার পাশাপাশি আনন্দ উপভোপে মেতে উঠেন স্থানীয়দের পাশাপাশি জ্যোতিবিজ্ঞানী ও পর্যটকরাও।

জ্যোতিবিজ্ঞানীদের একজন বলেন, ‘সুপারমুন চাঁদের একটি অনুমান। চাঁদ পৃথিবীর চারপাশের কক্ষপথে ঘোরে যাকে আমরা একটি উপবৃত্ত বলি। পূর্ণিমার সাথে একত্রে হলে তাকে বলি সুপারমুন।’

আরেকজন বলেন, ‘আজ উদ্ভাসিত হওয়ার একটি দুর্দান্ত দিন। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থতিতে ভেনেজুয়েলাবাসী সবকিছু ছাপিয়ে চাঁদের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। সত্যিকার অর্থে খারাপ সময় থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমাদের ভাল শক্তির প্রয়োজন।’

সিডনি অপের হাউসের সামনেও মেঘের আড়াল থেকেই সুপার মুনের সৌন্দর্য মুঠোফোনে বন্দি করেন দর্শনার্থীরা। ১৯৭৯ সালে সুপারমুন শব্দটি নামকরণ করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিচার্ড নোলে। চাঁদ যখন পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করে তখনই 'সুপারমুন' দৃশ্যমান হয়। এসময় পৃথিবী ও তার একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের গড় দূরত্বের চেয়ে ৯০ শতাংশ বেশি কাছাকাছি অবস্থান করে। তখন এটি ৩০ শতাংশের বেশি উজ্জ্বল এবং ১৪ শতাংশ বড় আকার ধারণ করে এই চাঁদ।

tech