বিদেশে এখন
0

দুই বছর বয়সী শিশুর আঁকা ছবি বিক্রি হচ্ছে ৩ লাখ ইউরোতে

জার্মানির নিউবোর্নে বেড়ে ওঠা এক শিশুর আঁকিয়ে প্রতিভা মুগ্ধ করছে সবাইকে। সামাজিক মাধ্যমে শিশুটির রয়েছে হাজারো অনুসারী। মাত্র দুই বছর বয়সী ছোট্ট এই শিশুর আঁকা ছবি বিক্রিও হচ্ছে প্রায় ৩ লাখ ইউরোতে।

জার্মানির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বাভারিয়ার শহর নিউবোর্ন। আর এখানেই বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস করে দুই বছরের ছোট্ট শিশু লরেন্ট। যে বয়সে লরেন্টের খেলনা নিয়ে মেতে থাকার কথা, সেই বয়সে সে ব্যস্ত থাকছে রং-তুলি আর ক্যানভাস নিয়ে। মাত্র দুই বছর বয়সী লরেন্টের রং-তুলির এই প্রতিভা দেখে বিস্মিত হচ্ছেন অনেকে।

২০২৩ সালে ইতালিতে ছুটি কাটানোর সময় হোটেলের পেইন্টিং রুমে ছোট্ট লরেন্ট প্রথম ছবি আঁকা শুরু করে। বিষয়টি তখন লরেন্টের মা লিসা এবং বাবা ফিলিপ শোয়ার্জ তাদের ছেলের নিছক আনন্দ হিসেবেই দেখতেন। কিন্ত ধীরে ধীরে তারা বুঝতে পারেন, লরেন্টকে ক্যানভাস থেকে দূরে রাখা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ছে। খেলনার চেয়ে রং আর ক্যানভাসেই বেশি মনোযোগী ছোট্ট লরেন্ট।

ছেলের এই প্রতিভাকে উৎসাহ দিতেই লরেন্টের মা লিসা ছেলের নামে একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেখানে লরেন্ট ছবি আঁকছে এমন বেশ কিছু ভিডিওও পোস্ট করেন তিনি। পোস্ট করা সেসব ভিডিও ও ছবি পরবর্তীতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা পেইন্টিং প্রেমীরা লরেন্টের চিত্রকর্মের প্রশংসা করতে থাকেন। তবে ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ছাড়াও লরেন্টস ডট আর্ট নামে একটি ওয়েবসাইটও রয়েছে। যেখানে হাজার হাজার অনুসারী লরেন্টের চিত্রকর্মের ভক্ত।

লরেন্টের মা লিসা শোয়ার্জ বলেন, ‘আমি জানি না কেনো আমি লরেন্টের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। লরেন্ট যখন আনমনে ছবিগুলো আঁকছিলো তখন আমি লুকিয়ে সেই মুহূর্তটি ভিডিও করি। যে কোনো মা তার সন্তানের এমন অসাধারণ প্রতিভা দেখে আনন্দ পাবেন। আমারও তাই হয়েছে।’

একটা সময় ইন্সটাগ্রামে আঁকা ছবিগুলো কিনতে আগ্রহী হন অনেকে। তাদের জন্য লরেন্টের আঁকা ছবিগুলো নিয়ে প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো ছবি সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৩ লাখ ইউরো পর্যন্ত মূল্যে নিলামে বিক্রি হয়।

লরেন্টের বাবা ফিলিপ শোয়ার্জ বলেন, ‘আমি কখনোই ভাবিনি লরেন্টের ছবিগুলো নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করতে হবে এবং সেগুলো নিলামে বিক্রি হবে। যা হচ্ছে সত্যিই অবিশ্বাস্য। একজন বাবা হিসেবে এটি সত্যিই গর্বের। অনেকেই লরেন্টকে শতাব্দীর সেরা প্রতিভা বলছেন কিন্তু আমার কাছে লরেন্ট শুধুই আমার ছেলে। সে পেইন্টিং করে আনন্দ পায় এবং আমরা তাকে উৎসাহ দিচ্ছি, এটুকুই।’

ইতিমধ্যেই চলতি বছরের এপ্রিলে মিউনিখের সবচেয়ে বড় আর্ট ফেয়ার 'আর্ট ডট মিউখ' এ লরেন্টের আঁকা ছবির প্রদর্শন হয়েছে। এছাড়াও, আগামী সেপ্টেম্বরে লরেন্টের প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনীর কথা ভাবছেন তার বাবা-মা।

tech