প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনি। রাজধানী পোর্ট মোরসবি থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে এঙ্গা প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিধসে চাপা পড়েছে ছয়টির বেশি গ্রাম। সম্প্রতি জাতিগত সংঘাতে বাস্তুচ্যুত হয়ে এই পাহাড়ি অঞ্চলে আশ্রয় নেয় অনেক মানুষ।
কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে শুক্রবার (২৪ মে) রাতে ধসে পড়ে পাহাড়ের বড় একটি অংশ। ঘুমের মধ্যেই মাটির নিচে চাপা পড়ে শত শত গ্রামবাসী। চোখের পলকেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি। বেশিরভাগ বাড়ি ছিল পাহাড়ের পাদদেশে।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, 'ঘরবাড়ি, পশুপাখি ও গবাদিপশু সবকিছুই মাটির নিচে চাপা পড়েছে। এই মুহূর্তে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও আশ্রয়ের প্রয়োজন। এখনো মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।'
আরেকজন বলেন, 'হতাহতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ভূমিধসে মূল সড়ক ভেঙ্গে গেছে। উদ্ধারকাজ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।'
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, এক থেকে দেড়শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। পরে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানায়, প্রাণহানির সংখ্যা সাড়ে ছয়শ'র বেশি। মাটির সঙ্গে মিশে গেছে কয়েকটি গ্রাম। এখনো ভূমিধসের শঙ্কা থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে উদ্ধারকাজ। পানির প্রবাহ এবং মাটি নরম হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে পুরো অঞ্চল।
লাঠি, কোদাল, দা দিয়ে মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করছে গ্রামবাসী। কিছু জায়গায় মাটির সঙ্গে বড় পাথর ও গাছ উপড়ে ৩০ ফুট পর্যন্ত গর্ত তৈরি হয়েছে। পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাবে গত ৩ দিনে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে মাত্র ৭ থেকে ৮টি মরদেহ। মূল সড়কের প্রায় ২০০ মিটার অংশ ভেঙে শহর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে দুর্গত এলাকা। পৌঁছানো যাচ্ছে না ত্রাণ ও জরুরি সেবা।
ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও পুনর্বাসনে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সরকার।