শেষবারের মতো চিরচেনা রাজধানী তেহরানে ফিরেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তবে এবার নিথর দেহে।
ইব্রাহিম রাইসিসহ তার সফরসঙ্গী নিহত ৯ জনের মরদেহ গ্রহণ করে ইরানের রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ব্যাক্তিরা। দেয়া হয় গার্ড অব অনার।
ইব্রাহিম রাইসিকে ছাড়াই তেহরানে শুরু হয় দেশটির পার্লামেন্টের ষষ্ঠ অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সে সময় সংসদে রাইসির নির্ধারিত চেয়ার কালো কাপড়ে ঢেকে এর ওপর তার ছবি রাখা হয়। শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে বাকী সদস্যরা।
এর আগে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাবরিজে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৯ জনের জানাজা দেয়া হয়। ৫ শহরে জানাজা শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে মাশহাদ শহরে দাফন করা হবে ইব্রাহিম রাইসিকে।
নেতাকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল ইরানের সাধারণ জনগণ। চলছে ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক।
স্থানীয় একজন বলেন, 'দুর্ঘটনার খবরে সবাই স্তব্ধ হয়ে গেছি। তিনি জনগণের প্রেসিডেন্ট ছিলেন যিনি দেশের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করতেন। আমাদের আরও প্রেসিডেন্ট শহীদ হয়েছেন। আমরা আরও কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছি। আশা করছি এই শোক আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।'
ইব্রাহিম রাইসি নিহতের ঘটনায় অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তায় জানানো হয়, ইরানের জনগণের গণতন্ত্র ও মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষায় নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী জো বাইডেন সরকার।
যদিও নিয়মিত ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জানিয়েছেন, রাইসির হাত নিরপরাধ মানুষের রক্তে রঞ্জিত ছিল।
ম্যাথু মিলার বলেন, 'প্রাণহানির জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে কারো মৃত্যু দেখতে চাই না। তবে দুর্ঘটনাটি একজন বিচারক ও ইরানের রাষ্ট্রপতি হিসাবে তার পরিসংখ্যানকে পরিবর্তন করতে পারবে না। তার হাত রক্তে রঞ্জিত ছিল।'
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানান, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না। দুর্ঘটনার কারণ কী, এ সম্পর্কিত তথ্য নেই পেন্টাগনের কাছে।
লয়েড অস্টিন বলেন, 'তদন্তের মাধ্যমে তাদেরই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। বিভিন্ন বিষয় দুর্ঘটনার পেছনে দায়ী থাকবে পারে। যেমন কারিগরি ত্রুটি কিংবা পাইলটের ভুল।'
এদিকে দায়িত্ব নিয়েই ২৮ জুন ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবের।
