বিদেশে এখন

১৪ হাজার ডলারের হীরার দুল ১৪ ডলারে বিক্রি!

অনলাইনে চটকদার পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখে হরহামেশাই প্রত্যারিত হচ্ছে অনেকেই। তবে এবার ঘটেছে ব্যক্তিক্রমী ঘটনা। প্রতিষ্ঠানের ভুলে নামমাত্র মূল্যে দামি পণ্য কিনে ফেলেন মেক্সিকোর এক ক্রেতা। বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ভুল দাম উল্লেখের কারণে মাত্র ১৪ ডলারে বিক্রি হয়েছে বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের ১৪ হাজার ডলারের একটি হীরার দুল।

অনলাইন বা ওয়েবসাইটে পণ্য কেনা এখন খুব সাধারণ বিষয়। পণ্যের দাম উল্লেখ থাকায় অনেকেই এখন ওয়েবসাইটে কেনাকাটায় বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। পছন্দের পণ্যে সাধ্য মিললেই ঝটপট অর্ডারে কেনাকাটা সেরে ফেলা যায় ওয়েবসাইটগুলোতে।

তবে এবার সেই ওয়েবসাইটে ভুল দাম উল্লেখের খেসারত দিতে হলো। এক দুই ডলার নয় ছোট্ট একটি ভুলে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে গচ্চা দিতে হলো পাক্কা ১৪ হাজার ডলার। ওয়েবসাইটে ১৪ হাজার ডলারের হীরের দুলের দাম উল্লেখ ছিল ১৪ ডলার। জ্বি ঠিকই শুনেছেন। ভুলবশত শেষের ৩টি শূন্য বাদ পড়ায় লোকসান গুনলো বিখ্যাত ফরাসি ব্র্যান্ড কার্তিয়ের।

আর তাদের এমন ভুলে বসন্তের আনন্দ উপভোগ করলেন মেক্সিকোর বাসিন্দা রোজেলিও ভিলারিয়াল। বিলাসবহুল অলংকার প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ডগুলোর ইতিহাসে এটি অন্যতম ব্যয়বহুল ভুল। সিবিএস নিউজের তথ্যমতে, দুল জোড়া ১৮ ক্যারেট স্বর্ণ ও ১৪২ ক্যারেটের হীরের তৈরি।

গত ২০ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট শেয়ার করেন রোজেলিও ভিলারিয়াল। লেখেন, অলংকারগুলোর দাম দেখে তিনি যথেষ্ট অবাক হয়েছিলেন। পেশায় চিকিৎসক রোজেলিও সুযোগটি হাতছাড়া করেননি। খুব দ্রুত দুল জোড়া কিনে ফেলেন তিনি।

তবে রোজেলিওর এই আনন্দ খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। কারণ, ভুল বুঝতে পেরে কার্তিয়ের রোজেলিওর অর্ডারটি বাতিলের চেষ্টা করে। পরিবর্তে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে এক বোতল শ্যাম্পেইন পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। কিন্তু রোজেলিও দমে যাননি। সিবিএস নিউজের খবরে বলা হয়, রোজেলিও মেক্সিকোর ফেডারেল কনজিউমার প্রোটেকশন এজেন্সির কাছে বিষয়টি উত্থাপন করলে তারা কার্তিয়েরকে তলব করে। এরপর টানা ২ মাস টানাপোড়েনের পর অবশেষে বিলাসবহুল ব্র্যান্ডটি কানের দুল জোড়া রোজেলিও ভিলারিয়ালের কাছে উল্লেখিত দামেই বিক্রি করে।

কানের দুল জোড়া হাতে পেয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেন রোজেলিও। ২৬শে এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি বাক্সের ছবি শেয়ার করেন তিনি। তবে কার্তিয়েরের এই ভুলকে কেনো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখলেন না রোজালিও? গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অর্ডার দেয়ার পর কোম্পানিটির প্রক্রিয়ায় তিনি বিরক্ত হয়েছেন। প্রথমে তারা অর্ডারটি বাতিল করে দেয় আর দ্বিতীয়বার যোগাযোগে স্টক শেষ বলে জানায়। প্রতিষ্ঠানের এমন ভিন্ন ভিন্ন অযুহাতের কারনে তিনি ফেডারেল কনজিউমার প্রোটেকশন এজেন্সির শরনাপন্ন হন।

এই ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে রোজেলিওর এই জয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। আবার প্রতিষ্ঠানটির ভুলের সুযোগ নিয়েছেন রোজালিও এমন মন্তব্য করেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

তবে এই মামলাটি মেক্সিকোর জনগণকে ভোক্তা অধিকার আইনসহ তাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রোজালিও ভিলারিয়াল।

ইএ

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর