বিদেশে এখন
0

রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে চাইছে জান্তা সরকার

প্রায় সাত বছর আগে গণহত্যা চালিয়ে রোহিঙ্গাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এবার সেই রোহিঙ্গাদের সাহায্য চাইছে জান্তারা। বাহিনীতে যোগ দিতে না চাইলে দেখানো হচ্ছে ভয়-ভীতি। আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ করতে ইতোমধ্যে অন্তত একশ' রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে নিয়োগও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব অস্বীকার করছে জান্তা সরকার।

২০১৭ সালে আগস্টে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিগতভাবে তাদের নির্মূল করতে পুড়িয়ে দেয়া হয় বসতভিটা। তখন জীবন রক্ষায় দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় রোহিঙ্গারা। যাদের বেশিরভাগই আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে।

জান্তা বাহিনীর সেই নৃশংসতার ৭ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই রাখাইনের কর্তৃত্ব ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে দেশটির সেনাবাহিনীর জন্য। কারণ এরই মধ্যে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হামলায় রীতিমতো নাস্তানাবুদ মিয়ানমারের সেনারা। একর পর এক দখল হারাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ শহরের।

এ অবস্থায় যে রোহিঙ্গাদের একসময় হত্যা করেছে, এখন তাদেরই সাহায্য চাইছে মিয়ানমার। সম্প্রতি অন্তত একশ' রোহিঙ্গাকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করতে জান্তা বাহিনীতে নিয়োগও দেয়া হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

রোহিঙ্গারা বলছেন, তারা জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে একবারেই ইচ্ছুক নন। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সামরিক প্রশিক্ষণে অনেক তরুণ যেতে না চাইলে তাদের পরিবার হুমকির শিকার হয়। বলতে গেলে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক নিয়োগ দিচ্ছে সেনাবাহিনী। বিএ-৬৩ রাইফেল দিয়ে দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। এরপর পাঠানো হচ্ছে যুদ্ধে।

এ অবস্থায় রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন যে, তাদের আবারও টার্গেট করছে জান্তা সরকার। তাই আরাকান আর্মির সঙ্গে চলমান যুদ্ধে তাদের কামানের খোরাক হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে সেনাবাহিনী। কিন্তু এসব কথা অস্বীকার করছেন জান্তা সরকারের মুখপাত্র জেনারেল জাও মিন তুন। তার দাবি, রোহিঙ্গাদের যুদ্ধে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। বরং রোহিঙ্গাদের প্রতিরক্ষায় সাহায্য করতেই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

এদিকে আরাকান আর্মির সাথে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে বেশ কয়েকটি এলাকায় খাদ্য সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এরমধ্যে আন্তর্জাতিক সাহায্য সরবরাহ বন্ধ। যার কারণে নাগরিকত্ব বঞ্চিত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে গ্রহণযোগ্যতার জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে।

ইএ